সরকারের ব্যর্থতায় করোনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে: ফখরুল

mirza fokrul
ফাইল ছবি

সরকারের উদাসীনতা, ব্যর্থতায় বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় সরকারের বাস্তবভিত্তিক ও পরিকল্পিত কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে লকডাউন সঠিকভাবে কার্যকর করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

তিনি বলেন, জোরপূর্বক নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে এখন জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে সরকার। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতাও নেই তাদের। ১২ বছরের অধিককাল ভয়াবহ দুঃশাসনের জন্য জনগণের কাছে সরকারকে জবাবদিহি করতেই হবে।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে গত বছরের তুলনায় করোনাভাইরাস মহামারি এখন আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সংকটময় পরিস্থিতি সামাল দিতে পূর্বের বছরের মতোই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে সরকার। পরিস্থিতির ভয়াবহতা রোধে সরকার কোনো চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে গত ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য দেশে লকডাউন/নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

তিনি বলেন, সরকারঘোষিত লকডাউনের বিরুদ্ধে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। প্রকৃত অর্থে লকডাউন বলতে যা বোঝায় রাস্তাঘাটে তার কোনো সামান্যতম চিত্রও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। সবকিছু খোলা রাখা হয়েছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বড় বড় ব্যবসায়ীসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দোকান কর্মচারী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ফরিদপুরের সালথায় বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ নামে-বেনামে চার হাজার জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও ইতোমধ্যে ২১ জন গ্রেফতার এবং হয়রানি-নির্যাতনের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারসহ গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

তিনি বলেন, ফরিদপুরের সালথায় গত ৫ এপ্রিল করোনা মোকাবিলায় সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় একজন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তার কর্মচারী কর্তৃক একজন দোকান কর্মচারীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। পরে এর প্রতিবাদে স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। জনসাধারণের বিক্ষোভ দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ ও একজনকে হত্যার পর ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপাতে উল্টো বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীসহ নামে-বেনামে চার হাজার সাধারণ মানুষকে আসামি করে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। এতে প্রমাণ করে সরকার মহামারি করোনা মোকাবিলা নয় বরং মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের দমন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে সালথায় পুলিশি গ্রেফতারি অভিযানের কারণে সারা এলাকা মানুষশূন্য হয়ে গেছে। সেখানে ভয়, আতঙ্ক ও বিভিষিকাময় পরিবেশ বিরাজ করছে। গ্রেফতারের নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে নিরীহ মানুষকে হয়রানি ও নির্যাতন করা হচ্ছে। সালথার ঘটনার সঙ্গে বিএনপি কোনোভাবে জড়িত না থাকলেও কেবলমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অথচ গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে সালথার ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের উসকানি ছিল।