কল্যাণের মাসে যে দোয়া করা উচিত

Ramadan islam

প্রেমের মাস, বরকতের মাস, কল্যাণের মাস এগিয়ে আসছে। আসছে কোরআনের মাস। লাইলাতুল কদর- প্রেমের ইতিকাফের মাস। রমজান হলো প্রাণ খুলে চাওয়ার মাস। দুই হাত ভরে পাওয়ার মাস। কী চাইব? কী পাব? আমরা এতই কম জানা মানুষ, কী চাইতে হবে কী পেতে হবে সে জ্ঞানও আমরা ভুলে গেছি। খুব আফসোস হয়, যখন কেউ বলে, হুজুর! দোয়া করবেন ব্যবসাটা যেন আরও ভালো করতে পারি। দোয়া করবেন রমজানের পরে বাড়ির কাজ ধরব। কিন্তু কেউ বলে না, দোয়া করেন আল্লাহ যেন আমার জীবনকে কোরআনের নুর দিয়ে, ইমানের নুর দিয়ে নুরানি করে দেন। কেউ বলে না, এ জীবনে এতগুলো বসন্ত পেরিয়ে এলাম কোরআনের একটি আয়াতও বুঝে পড়ার সৌভাগ্য হয়নি। আল্লাহর কাছে দোয়া করুন তিনি যেন আমাকে তাঁর কালাম বোঝার তৌফিক দেন। তিনি যেন আমাকে ইমানের সঙ্গে মরার তৌফিক দেন। প্রিয় পাঠক! আসুন! এখন থেকে, এ রমজান থেকেই আমরা আমাদের চিন্তা-চেতনায়, কাজে-কর্মে, ধ্যানে-জ্ঞানে আখিরাতকে প্রাধান্য দিই। আল্লাহ বলেছেন, ‘ওয়া আসারাল হায়াতাদ দুনিয়া। ফাইন্নাল জাহিমা হিয়াল মাওয়া’। তারা তো আখিরাতের ওপর দুনিয়াকে প্রাধান্য দিত। তাদের আবাস হবে অনন্ত জাহান্নামে। প্রিয় পাঠক! এ রমজানে আমরা আমাদের মনের কথাগুলো আল্লাহকে বলব। আমাদের প্রয়োজনমতো চাইব। সঙ্গে ওই দোয়াগুলোও করব যেগুলো প্রিয় নবীজি (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন। দোয়া করার বড় আদব হলো বান্দার কথা ও ভাবে চূড়ান্ত বিনয় প্রকাশ। প্রয়োজনে সে বিনয়ের ভানও করতে পারে। যেভাবেই হোক তাকে দেখে যেন বোঝা যায় সে এক তুচ্ছ বান্দা। যার কাছে চাচ্ছে তিনিই সব। আরেকটি কথা। আমরা অনেকেই মনে করি আরবি ভাষায় দোয়া করতে হবে। না, বিষয়টি তেমন নয়। আপনি যে ভাষায় বলবেন আল্লাহ সে ভাষা-ই বুঝবেন। আজকের লেখায় একটি দোয়া আপনাদের জানাতে চাই। দোয়াটি হাদিস থেকে নিয়েছি। নবী (সা.) কত বিনয়ী হয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া চেয়েছেন। এ দোয়া ছাড়া আপনি আরও অনেক দোয়া পড়তে পারেন। দোয়া করার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। আল্লাহর দুয়ার সব সময় খোলা। আল্লাহর কান সব সময় আপনার মনের সঙ্গে লাগানো। তাই যে কোনো সময় যখন মনে চাইবে আল্লাহকে ডাকুন। মনের কানটি খোলা রাখলে আল্লাহর জওয়াব অবশ্যই শুনতে পাবেন। আসুন জেনে নিই কয়েকটি দোয়া। হুজুর (সা.) প্রায় সময় একটি দোয়া করতেন। দোয়াটি অনেক বড়। এখানে সংক্ষেপে বলছি। নবী (সা.) দোয়া করতেন, হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে একটুখানি দয়া ভিক্ষা চাই। আমার মনে হেদায়াতের আলো ঢেলে দাও। আমার চিন্তাকে সুন্দর করে দাও। আমার প্রিয়কে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও। আমার জীবনকে সাজিয়ে দাও। বর্তমানের চেয়ে আমার ভবিষ্যৎকে আরও সুন্দর কর। হে আল্লাহ! সব ভরসা তোমারই ওপর। তুমি ছাড়া ভরসা করার মতো কেউ নেই। অবশ্যই তুমি করুণাময়-প্রেমময় প্রভু। তুমি আমার মনকে আলোকিত কর। আমার কবরের জীবনকে সুন্দর কর। আমার কান আলোকিত কর। যেন এ কান দিয়ে আমি সব ভালো কথা শুনতে পারি। আমার চোখে নুর দাও যেন সব সুন্দর দেখতে পারি। আমার পশমে, পেশিতে, আমার পুরো শরীরে তোমার নুর ঢেলে দাও। যেন আমি নিজেকে তোমার পথে উৎসর্গ করতে পারি। হে আল্লাহ! আমার ডানকে আমার বামকে। সামনে-পেছনে, ওপর-নিচে সবদিক তুমি আমার আলোকিত করে দাও যেন কোনো অকল্যাণ আমায় ছুঁতে না পারে।

লেখক : চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ মুফাস্সির সোসাইটি পীর সাহেব, আউলিয়ানগর।