পাঁচ দশকে প্রথমবার নিম্নমুখী জনসংখ্যা, দাবি চীনের

চীনের জনসংখ্যা কমছে। পাঁচ দশকে এই প্রথমবার এই কথা তারা জানিয়েছে। চীনা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে বেইজিংয়ে জন্মহার সর্বনিম্ন।

ভারতের প্রতিবেশি দেশের বিশেষজ্ঞদের দাবি, এভাবে যদি জনসংখ্যা কমে তাহলে আগামী ২০২২ সালের মধ্যে বেইজিংয়ের জনসংখ্যা কমতে শুরু করবে। তারা দাবি করছেন, এভাবে চললে ২০২৭ সাল যখন আসবে তখন সমগ্র চীনের জনসংখ্যাও নিম্নমুখী হবে।

চীনা জনসংখ্যার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে বেইজিংয়ে ১ লাখ ৩৬৮টি শিশু জন্ম নিয়েছে। ২০১৯ সালে প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৬৮ বেশি শিশু জন্ম নিয়েছিল, অর্থাৎ ৩২ হাজার বেশি শিশু জন্ম নিয়েছিল। চীনের গবেষকরা বলছেন, ২০২২ সালে থেকে কমতে শুরু করবে চীনের শহরাঞ্চলের জনসংখ্যা। তারপর সমগ্র চীনেই পরিলক্ষিত হবে।
সেদেশের প্রশাসনের দাবি, দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশেও, ঝেনজিয়াং যা পূর্ব চীনে অবস্থিত সেখানেও ব্যপকভাবে কমেছে নবজাতকের সংখ্যা। সমগ্র চীনেই যে তাদের জন্মহার নীতি ফলপ্রসূ হচ্ছে তা স্পষ্ট। যে হারে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে তার ফলে বছরে এক কোটির কম শিশুর জন্ম হতে পারে সে দেশে।

জনসংখ্যা কমা চীনের জন্য ভালো খবর। তবে সে দেশের বিশেষজ্ঞদের দাবি, এর খারাপ দিকও আছে। খারাপ দিক কোনটা? আসলে চীনের যে এই ব্যাপক উন্নত অর্থনীতির এর পিছনে রয়েছে বিপুল জনসংখ্যাই। কম খরচ করে বেশি কাজ করিয়ে দেশে উৎপাদন করা হয় পণ্য। জনসংখ্যা কমলে অন্যান্য দেশে পণ্য চাহিদা যদি একই থাকে তাহলে কম লোক থাকার জন্য তখন তৈরি করতে পারবে না তারা। পাশাপাশি ওই কম টাকায় বেশি খাটিয়ে নেওয়ার নীতিও বন্ধ করতে হবে। বেশি টাকায় কাজ করতে হবে। প্রশাসনের ওপর তখন অর্থনৈতিক টানের প্রভাব পড়তে বাধ্য। অর্থাৎ বড় প্রভাব পড়তে পারে চীনা অর্থনীতিতে।

এক সময় চীনে জন বিস্ফোরণ শুরু হয়েছিল। তা ঠেকাতে ১৯৭৯ সালে এক সন্তান নীতি চালু করেছিল চীনের সরকার। যা চিনের অর্থনীতিতে ভালো প্রভাব ফেলেছিল। মানুষের সঞ্চয়ের জায়গা বেড়েছিল কিন্তু পরে দেখা যায় সেখানকার বয়স্কদের দেখাশোনার জন্য লোকজনের অভাব দেখা যাচ্ছিল। অনেক পরিবার আবার সন্তানহীন হয়েও পড়েছিল। অনেক গবেষণা করেন ২০১৬ সালে দুই সন্তানের অনুমতি দেওয়া হয়। এখন জানা যাচ্ছে নীতিতে পরিবর্তন প্রয়োজন। ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় থাকতে তিন সন্তানের নীতি আনার ভাবনায় আছে তারা।