জামালপুরে পাটের বাম্পার ফলন, ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা

পাটকে বাংলাদেশের সোনালী আঁশ বলা হয়। পাট রপ্তানিযােগ্য প্রধান অর্থকরী ফসল। এ বছর জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই পাট কাটা জাগ দেয়া আর শুকানো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে জামালপুরের পাট চাষীরা।

জানা যায়, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ সদর, চুকাই বাড়ি, চিকাজানী, বাহাদুরা বাদ, হাতীভাঙ্গা, পাররামরামপুরসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নেই পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে খুশি এ অঞ্চলের পাট চাষীরা।

এবার আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকায় আর আগাম বন্যা না হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। তাই সকাল থেকেই পাট কাটা, জাগ দেয়া আর পাট শুকানো নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের পাট চাষীরা। তবে পানি না থাকায় কিছু এলাকায় পাট জাগ দিতে পাড়ছে না পাট চাষীরা।

পাট জাগ দিতে না পাড়ায় বেকায়দায় পড়েছে পাট চাষীরা। গত বছর পাট চাষ করে ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর পাট চাষে আগ্রহী হয়েছেন অনেকেই। ফলন আর বাজারে ভালো দাম থাকায় লাভবান হবে পাট চাষীরা। কম খরচে কম পরিশ্রমে কম সময়ে অধিক লাভের ফসল পাট।

পাট চাষ করতে প্রতি বিঘা জমিতে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। তিন মাসের মধ্যে পাট কৃষকের ঘরে উঠে। প্রতি বিঘা জমিতে উৎপাদন হয় ৮-১০মণ পাট। পাটের মান অনুযায়ী প্রতি মণ পাট ৩হাজার থেকে সাড়ে ৩হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশে ও বিদেশে এ পাটের চাহিদা রয়েছে।

এতে কৃষক অন্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে। গত বছর পাটের মান অনুযায়ী প্রতি মণ পাট বিক্রি হয়েছে ২হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। এবার গত বছরের চেয়ে বাজারে পাটের দামও ভালো রয়েছে। গত কয়েক বছর কৃষক পাটে সঠিক দাম পাওয়ায় পাট চাষে এগিয়ে আসছে।

এর ফলে পাটের সোনালী দিন ফিরে এসেছে। কৃষকরা এখন আবার পাট চাষে আগ্রহী হয়েছে। পাটে কৃষকের লাভ বেশী। চারা পাট গাছ পাট শাক হিসেবে বাজারে বিক্রি করে। পাটের শোলা (পাট কাঠি ) জ্বালানী হিসেবে এবং বিভিন্ন বোর্ড যেমন ব্ল্যাক বোর্ড, হার্ড বোর্ড ইত্যাদি তৈরীর কাঁচামাল হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

এতে কৃষক পাটের সঠিক দাম পেয়ে থাকে। তাই পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সরদারপাড়া এলাকার পাট চাষী জানান, পাট চাষের জন্য এবার অনুকূল পরিবেশ ছিলো। আগাম বন্যা না হওয়ায় পাটের কোন ক্ষতি আর বাজারে এবার দামও ভাল। পাট চাষীরা লাভবান হবে।

সরদারপাড়া এলাকার পাট চাষী নুরল হক জানান, এ বছর বাজারে পাটের দামও ভালো। গত বছর যে পাট ২হাজাট থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে এ বছর সেই পাট ৩হাজার থেকে সাড়ে ৩হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এ কারণে অনেকেই অন্যান্য ফসল বাদ দিয়ে পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পরেশ চন্দ সাহা জানান, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার এ বছর পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর দ্বিগুণ পাটের চাষ করেছেন চাষীরা।কৃষি অফিস এ বছর চাষীদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ সার বিতরণ করেছে।

এ বছর দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সাড়ে ৪হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও পাট চাষ হয়েছে ৫হাজার হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অনেক বেশি।