তালেবানের দখলে কাবুল বিমানবন্দর

দীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধ শেষে আফগানিস্তান ছেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার মার্কিন সামরিক বাহিনীর সবশেষ ফ্লাইটটি আফগান ভূখণ্ড ছেড়ে যায় বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।

এরপরই কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ করেছে তালেবান। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওর বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়- তালেবান সদস্যরা কাবুল বিমানবন্দরে হেঁটে হেঁটে প্রবেশ করছেন। বিবিসি অবশ্য নিরপেক্ষভাবে এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

ভিডিওতে একদল মানুষকে – যাদেরকে তালেবান যোদ্ধা বলে মনে করা হচ্ছে – বিমানবন্দরের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে। একইসঙ্গে সেখানে তারা ঠিক কী কী দেখছেন সেটাও ক্যামেরায় বর্ণনা করতে দেখা যায়। ভিডিওতে এসময় ওই ব্যক্তিদের পেছনে বিমান দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

এসময় এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়:‘আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা। সকল প্লেনই এখানে পার্ক করা আছে। আমরা বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ করেছি। এখানে কোনো সমস্যা নেই। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা।

সেখানে আরও বলা হয়, মানুষের প্রতি আমার বার্তা হচ্ছে- চিন্তার কোনো কারণ নেই। সবকিছুই ভালোভাবে চলছে। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা।

উল্লেখ্য, সোমবার মার্কিন সামরিক বাহিনীর সবশেষ ফ্লাইটটি আফগানিস্তান ত্যাগ করে। এর মাধ্যমে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো যুদ্ধের চূড়ান্ত সমাপ্তি ঘটল।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন, তারা ছয় হাজার মার্কিন নাগরিকসহ ৭৯ হাজার মানুষকে কাবুল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গেছে।

১৪ আগস্ট তালেবান কাবুল দখল করার পর অল্প সময়ের মধ্যে তাদের নেয়া হয়। এক ব্রিফিংয়ে কেনেথ ম্যাকেঞ্জি সাংবাদিকদের বলেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়েছে ঘোষণা করতে আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি।

তিনি বলেন, আজ রাতের এ প্রত্যাহার শুধু সেনা প্রত্যাহারই নয়, বরং এটি প্রায় ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধেরও সমাপ্তি, যে যুদ্ধ আফগানিস্তানে ২০০১ সালের ১ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছিল।

গত এপ্রিলেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সৈন্য পুরোপুরি প্রত্যাহারে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী সৈন্য প্রত্যাহার শেষ করল মার্কিনিরা।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে আল-কায়েদার জঙ্গি হামলার পর আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনী অভিযান শুরু করে। অবশেষে সেই আফগান যুদ্ধের অবসান হলো।