পাইকগাছায় ক্ষতিগ্রস্থ ঘের মালিকের বিপক্ষে মৎস্য কর্মকর্তা!

খুলনার পাইকগাছায় পার মধুখালী ও রাধানগরের খালে স্থানীয় এক ঘের মালিকের দশ লাখ টাকার মাছ চলে গেলে তা ফেরত আনতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

ওই মৎস্য কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্তের দায়িক্ত দেয়া হলেও তিনি গড়িমসি করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাছ ধরার সুযোগ করে দিচ্ছেন। ফলে সঠিক তদন্ত ও ন্যায় বিচার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ ঘের মালিক সুফিয়ান বিশ্বাস।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, পাইকগাছার দেলুটি ইউনিয়নে পার মধুখালী ও রাধানগর গ্রামে সরকারি দুটি খাল রয়েছে। দুটি খাল একটির সাথে অপরটি যুক্ত। দীর্ঘদিন পলি জমে খাল দুটি ভরাট হয়ে যায়। এতে এলাকায়
জলাবন্ধতা ও ফসলের ক্ষতি হয়।

জলাবন্ধতা সমস্যা লাঘবের জন্য চলতি বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে চলতি বছর খাল দুটি খনন করা হয়। খননের কাজ শেষ না হলেও স্থানীয় ইউপি সদস্য চম্পক বিশ্বাস ও গৌমত মিস্ত্রি খালের দুই পাশে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছে। এতে খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাসকে ম্যানেজ করে তারা অন্যায়ভাবে খালে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি টানা ৭/৮ দিনের প্রবল বৃষ্টিতে স্থানীয় ঘের মালিক সুফিয়ান বিশ্বাসের ঘেরের প্রায় দশ লাখ টাকার মাছ খালে চলে যায়।

তিনি ওই মাছ খাল থেকে ধরে নিতে গত ৭ জুলাই খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। জেলা প্রশাসক বিষয়টি আমলে নিয়ে পাইকগাছার ইউএনও কে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন।

ইউএনও বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা মৎস্যে কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাসকে দায়িক্ত দেন। মৎস কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাস তদন্তের নামে স্থানীয়দের সাথে নিয়ে উল্টো খাল থেকে মাছ ধরে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে ঘের মালিক সুফিয়ান বিশ্বাস ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়রা তাকে গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেয়।

এব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ ঘের মালিক সুফিয়ান বিশ্বাস পাইকগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। যার নং-১৪৮১। তাং- ২৬-০৮-২০২১। ঘের মালিক সুফিয়ান বিশ্বাস জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি তদন্ত করে তাকে মাছ ধরার অনুমতি দেয়ার জন্য মৎস্য অফিসার পবিত্র কুমার দাসকে দায়িক্ত দিলেও তিনি উল্টো তাকে হয়রানি করছেন।

মৎস্য কর্মকর্তা স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাকে মাছ ধরে নিতে দিচ্ছেন না। এমনকি স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে ঘের মালিক সব মাছ ধরে নিয়ে গেছে বলে মৎস্য কর্মকর্তা বলেছেন যে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন।

তিনি মৎস্য কমকর্তার শাস্তির দাবী ও মাছ ধরে নিতে অনুমতি প্রদানে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অভিযোগের ব্যাপারে উপজেলা মৎস কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত ঘেরের মাছ সরকারি খালে গেলে তা ধরে নেয়া যায় নাকি?

তারপরও ওই ঘের মালিক একবার মাছ ধরে নিয়ে আবার মাছ ধরতে চায়। তবে তিনি নিজে মাছ ধরা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে নানা অপতৎপরতার বিষয়টি অস্বীকার করেন।