গোটা জাতিকে এতিম করার সকল প্রচেষ্টা নিয়েছে সরকার

সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলব হওয়া প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।

অর্থাৎ সাংবাদিকরা অবরুদ্ধ থাকুক, কথা বলো না। বেঁচে থাকলেও তুমি জীবন্ত লাশ। গোটা জাতিকে এতিম করার সকল প্রচেষ্টা নিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। তিনি ক্রমাগত ভাবে সেটাই করছেন।

রোববার ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খাঁ হলে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আজকে টেকনোলজির কারণে অনেক কিছুর সংবাদ চলে আসছে। সংবাদ চলে আসছে বলেই অনেক কিছুর খবর চলে আসে। আজকে অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় সম্পদ পাচার করছেন।

তাদেরকে সরকার কিন্তু কোন টার্গেট করছেন না, তাদেরকে ধরেন না। আজকে সাংবাদিকরা কয় টাকা বেতন পান? আজকে বাংলাদেশ ব্যাংককে দিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে,

কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এদের অনেককে আমরা চিনি। অনেকের মাস গেলে খাওয়ার পয়সা থাকে না। এদের অ্যাকাউন্ট চেক করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তার মানে সামনে নির্বাচন আসছে এই নির্বাচনে যত ধরনের অনাচার, যত ধরনের অপ প্রক্রিয়া আছে এটা সরকার করবে এবং এর বিরুদ্ধে যেন কোন সাংবাদিক যাতে না লিখে

এবং তার পত্রিকায় কোন ধরনের প্রচার না দেয়। এই কারণেই এটা রাষ্ট্রীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আইনই যেখানে নেই সেখানে আইন দিয়ে কি করবেন?

এতে আপনাদের উদ্দেশ্যটা বোঝা যায়। প্রধান নির্বাচন কমিশন এমন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান যে, নির্বাচন কমিশন নিজেই একটি স্বাধীন সত্তা। সেই স্বাধীন সত্তার যে ক্ষমতা নিজেই স্বেচ্ছামূলক আত্মসমর্পণ করতে চান তিনি কে এম নূরুল হুদা।

এই ধরনের ব্যক্তিকে খুঁজে আনতে চান আপনারা । কেএম নূরুল হুদা অত্যন্ত জরুরি আপনাদের কাছে। কারণ নিশিরাতে নির্বাচন জায়েয করবে কে? প্রতিদ্বন্দ্বিহীন নির্বাচন জায়েজ করবে কে?

এখন স্বতন্ত্র কেউ নির্বাচন করতে চায় না। তারা যানে যে নির্বাচনের দিন শেষে সরকারি দলের যে থাকবে তাকে নির্বাচিত করা হবে।

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব আর হাসান মাহমুদ সাহেব কেএম নূরুল হুদার মতো লোক খোঁজার জন্য যত ধরনের কাজ করা দরকার সেই কাজগুলোই তারা করছে।

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ সুতরাং তাদের খুঁজে বের করতে হবে কেএম নূরুল হুদার মতো একজন লোক খুঁজে পাওয়া যায় কিনা।

কারণ আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের আরেকটি পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী নির্বাচনে কেএম নূরুল হুদার মতো সিল মারবে বৈধতা দেবে তাদের এমন একটা লোক প্রয়োজন।

এজন্য সংবিধান বহির্ভূত আইন বহির্ভূত কথাবার্তা বলছেন তারা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাঝে মধ্যে কিছু কিছু ডায়লগ দেন। জাস্ট একটা জাদুর পরিস্থিতি তৈরি করেন। যে মানুষ এই জাদু দেখে বিমোহিত হতে থাকে। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা ভাবে যে, বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত বেকুব।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশের মানুষের একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন। মানুষ ভোট দিতে যাবে দেখবে যে তার ভোট আগেই হয়ে গেছে, অথবা সে ভোট দিতে যাবে না, অথবা সে জানবে যে তার ভোটটা রাতেই দেওয়া হয়ে গেছে।

এই নির্বাচন কমিশন যেই পদ্ধতিগুলো শুরু করেছে এই পদ্ধতি আমরা চাই না। বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে এবং যারা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে বিশ্বাস করে তাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি আজকে প্রবল বেগে রাস্তায় নামতে হবে। তার কোন বিকল্প নেই।

আর নির্বাচন কমিশন স্বাধীন দেশে স্বাধীন ভাবে কাজ করবে তখনই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নিরপেক্ষ সরকার যখন প্রতিষ্ঠিত হবে। এর কোন বিকল্প নেই।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারে যারা আছেন তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চান। তারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চান, তারা বিরোধীদল শূন্য দেশ কায়েম করতে চান।

সেখানে তো বিকল্প ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাদের কথায় কোথাও গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। ইতিহাসকে পদদলিত করে মাটিচাপা দিয়ে তারা তাদের মতো ইতিহাস রচনা করেন।

সেই দেশে আপনি যাকে দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করেন সে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না যদি একটি নির্দলীয় সরকার না হয়।