টিকে থাকার লড়াইয়ে আজ ওমানের মুখোমুখি বাংলাদেশ

বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে স্স্নো উইকেটে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। এই ধরনের উইকেটে খেলে বিশ্বকাপে জ্বলে ওঠা যাবে না বলে আগেই সতর্ক করেছিলেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের যুক্তি ছিল জয়ের অভ্যাস করা, জয়ের আত্মবিশ্বাস হবে বিশ্বকাপে দলের জ্বালানি। সেই জয়গুলো কী তবে ভুল বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছিল?

বিশ্বকাপের শুরুতেই স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শঙ্কা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ সুপার টুয়েলভে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে কিনা।

জয়ের ধারায় ফিরে টি২০ বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্য নিয়ে আজ মঙ্গলবার ওমানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। মাসকাটের আল আমিরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে গ্রম্নপ ‘বি’তে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সহ-আয়োজক ওমানের বিপক্ষে ম্যাচটি টাইগারদের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের জন্য ম্যাচটি বাঁচা-মরার লড়াই। টাইগারদের ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে এবং ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে বিটিভি, গাজী টিভি ও টি-স্পোর্টসে। বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় ম্যাচটি হবার কথা ছিল সুপার টুয়েলভ নিশ্চিতের, কিন্তু এখন তারা বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামছে।

কারণ নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে গেছে টিম বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে চায় না বাংলাদেশ। ২০১২ সালে এই ফরম্যাটে প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ ও স্কটল্যান্ড। সে ম্যাচটি জিতেছিল স্কটল্যান্ড। এবারও বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিল স্কটিশরা।

৫৩ রানে ৬ উইকেট পতনের পরও, ৯ উইকেটে ১৪০ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় স্কটল্যান্ড। এরপর বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে ১৩৪ রানে আটকে রাখে স্কটিশরা। এ ম্যাচের উইকেট ছিল পুরোপুরি ব্যাটিং সহায়ক। কিন্তু ধীর উইকেটে ব্যাটিং করার অভ্যাসে সমস্যার মুখে পড়ে বাংলাদেশ।

ওপেনাররা দ্রম্নত আউট হবার পর, দুই অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান ধীরলয়ে ব্যাটিং করেছে। সাকিব-মুশফিকের আউটের পরও উইকেটে মাহমুদউলস্নাহ থাকায় বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ের সুযোগ ছিল। কিন্তু মাহমুদউলস্নাহ নিজেও ধীরগতিতে ব্যাট করেছেন।

তবে এই ধরনের উইকেটে তাদের আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে হবে বলে স্বীকার করেছেন মাহমুদউলস্নাহ। প্রথম ম্যাচে হারের জন্য ব্যাটিংকে দায়ী করেন তিনি। ওমানের বিপক্ষে ‘বাঁচা-মরার’ ম্যাচে কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন বলে মনে করেন মাহমুদউলস্নাহ।

তিনি বলেন, আমাদের ব্যাটিং উদ্বেগের বিষয়। আমাদের আরও ভালো ব্যাটিং করতে হবে। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন আমাদের আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে হবে। ব্যাটিং লাইন-আপে নয় নম্বরে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন পর্যন্ত আমাদের ব্যাটিং গভীরতা আছে। সামনের ম্যাচে আমাদের কিছু পরিবর্তন নিয়ে ভাবতে হবে।

মাহমুদউলস্নাহ আরও বলেন, আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে ধীরগতিতে ব্যাট করিনি। আমরা বাউন্ডারি মারতে পারিনি। পরেরবার আমাদের আরও ভালো ব্যাটিং করতে হবে। ম্যাচ হারার পর অনেক কিছুই উঠে আসবে। আমি মনে করি আমরা ভালো খেলিনি, কিন্তু আমরা একটি ভালো টি২০ দল।

আমাদের সামর্থ্য আছে। আমরা যখন আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলি, আমরা ম্যাচ জিততে পারি। এখন পর্যন্ত একবার ওমানের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের টি২০ বিশ্বকাপে বাছাই পর্বের রাউন্ডে ওমানকে বৃষ্টি আইনে ৫৪ রানে জিতেছিল টাইগাররা।

ব্যাট হাতে ৬৩ বলে ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন তামিম ইকবাল। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের পক্ষে এটিই একমাত্র সেঞ্চুরি। তবে এবারের বিশ্বকাপে দলে নেই তামিম। নিজ থেকেই বিশ্বকাপ দল থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি।

বিশ্বকাপের আগে টানা তিন ম্যাচ হারে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে। শ্রীলংকা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দু’টি অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচের পর এবার বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের কাছে হার। তবে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে ওমান।

নিজেদের কন্ডিশনে খেলার কারণে ঘরের সুবিধা নিয়েছে তারা। তবে সুপার টুয়েলভে খেলা নিয়ে চিন্তায় পড়লেও, কোনো প্রকার ছাড় দিতে রাজি নন মাহমুদউলস্নাহ। টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরমেন্স আশানুরূপ নয়।

এখন পর্যন্ত ১১৪ ম্যাচে ৪১টি জিতেছে তারা। ৭১ ম্যাচে হার ও দু’টি পরিত্যক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপে ২৬টি ম্যাচ খেলেছে এবং মাত্র পাঁচটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে বাছাই পর্ব থেকেই চারটি জয় এসেছে। বাছাই পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে তারা।