শার্শায় ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে বিরাজ করে ভয়াবহ আতঙ্ক

যশোরের সীমান্তবর্তী উপজেলা শার্শায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে বিরাজ করে ভয়াবহ আতঙ্ক। প্রার্থী ও ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। প্রার্থীরা চাইছেন নিরপেক্ষ ভোট এবং ভোটাররা চাইছেন তাদের ভোট প্রয়োগের অধিকার এ নিয়ে দোটানায় রয়েছেন উভয়েই।

শার্শা উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের মধ্যে ভোট হচ্ছে ১০ টি ইউনিয়নে। মামলা জটিলতার কারণে একটিতে ভোট হচ্ছে না। শার্শা, উলাশী, বাগআচড়া, কায়বা, গোগা, পুটখালী, লক্ষনপুর, ডিহি, নিজামপুর ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মধ্যে পুটখালি ও গোগা ইউনিয়নের নির্বাচন সবচেয়ে বেশী ঝুঁকিপূর্ণ।

এ দুটি ইউনিয়নে রাত-দিন নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা, অফিস ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ সহ ঘটছে বোমা হামলার ঘটনা। পুটখালী ইউনিয়নে নৌকার প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন আ:গাফফার ও আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন সতন্ত্র প্রার্থী মো: নাসির উদ্দিন।

গোগা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী আব্দুর রশিদ ও আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তবিবর রহমান তবি। এই ইউনিয়নেও হামলা, পাল্টা হামলা, অফিস ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটছে প্রায়শই।

শুক্রবার সকালে অগ্রভুলোট মাদ্রাসার সামনে নৌকার প্রার্থী আব্দুর রশিদের সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী তবিবুর রহমান তবির নির্বাচনী অফিস ভাংচুর হামলা করে। পরে দু’প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় কমবেশি ১০জন আহত হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে ও পুটখালী ইউনিয়নে আনারস মার্কার অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। নৌকার প্রার্থী আব্দুল গফ্ফার জানান, নির্বাচনী প্রচারনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরাই আমার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে।

প্রচার প্রচারনায় তারা আমাদের বাধা দিচ্ছে। আনারস মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: নাছির উদ্দিন জানান, নৌকার প্রার্থী আব্দুল গফ্ফার তার গুন্ডা বাহিনী দিয়ে আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে। আমার নেতা কর্মীদের নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা করতে দিচেছ না।

আমি চাই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে তার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাচ্ছি। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিওিআচড়া ও বালুন্ডা গ্রামে আমার নির্বাচনী অফিসে বোমা হামলা হয়েছে। আমার কর্মীদের ওপরও হামলা হয়েছে।

পুটখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আলতাফ হোসেন জানান, পুটখালী ইউনিয়নের ভোট নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে সাধারন মানুষের মাঝে। ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে তাদের ভোট দিতে পারে তার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।

কেউ যেন ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাই অথবা ভোট ডাকাতি করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকারও আহবান জানান তিনি। শার্শা উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, শার্শা উপজেলার মোট ১০ টি ইউনিয়নে ভোট হচ্ছে আগামী ২৮ নভেম্বর।

তবে ১০টির মধ্যে পুটখালি ও গোগা ইউণিয়নের নির্বাচন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন। পুটখালি ইউনিয়েনে মোট ভােটার সংখ্যা-২২ হাজার ১৮৫। ও গোগা ইউনিয়েনে মোট ভােটার সংখ্যা-২০ হাজার ৭৫০। আমরা ভোট নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান জানান, পুটখালি ইউনিয়নে বেশ ক’দিন ধরে নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা চলছে। রাতে বোমা হামলা ও অফিস ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে। আমরা এখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহনের জণ্য সব ধরনের প্রচেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি।