রাশিয়ায় পরমাণু হামলার মহড়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অভিযোগ মস্কোর

যুক্তরাষ্ট্র চলতি মাসে রাশিয়ার ওপর পারমাণবিক হামলা চালানোর মহড়া দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু।

তিনি জানান, দু’টি পৃথক দিক থেকে এই হামলার মহড়া চালানো হয় এবং মহড়ার সময় মার্কিন বোমারু বিমানগুলো রুশ সীমান্তের ২০ কিলোমিটারের (১২.৪ মাইল) মধ্যে চলে আসে।

মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই অভিযোগ করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের দাবি, তাদের সামরিক মহড়ার কথা আগেই প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক প্রোটোকল মেনেই তা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এক সময়ে এই অভিযোগটি সামনে আনলেন যখন ইউক্রেন নিয়ে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এছাড়া যেকোনো সময়েই রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর হামলা চালাতে পারে বলেও মার্কিন কর্মকর্তারা উদ্বেগ জানিয়ে আসছেন।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন ধারণাকে মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেছে ক্রেমলিন। অপরদিকে উস্কানিমূলক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, সামরিক জোট ন্যাটো এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছে মস্কো।

এছাড়া পূর্ব ইউক্রেনে রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে তুরস্কের নির্মিত সামরিক ড্রোন ব্যবহার এবং রুশ সীমান্তের কাছে ন্যাটো জোটের সামরিক মহড়ারও বিষয়েও অসন্তুষ্টি জানিয়েছে রাশিয়া।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু মঙ্গলবার বলেন, রাশিয়ার সীমান্তের কাছে মার্কিন স্ট্রাটেজিক বোমারু বিমানের কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে বলে মস্কোর নজরে এসেছে। চলতি মাসেই মার্কিন এসব স্ট্রাটেজিক বোমারু বিমানের ৩০টি ফ্লাইট রাশিয়ার সীমান্তের কাছে মহড়া দিয়েছে।

গত বছরের এই সময়য়ের তুলনায় এই সংখ্যা আড়াইগুণ বেশি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ায় কৃত্রিম পারমাণবিক হামলার মহড়া চালায় যুক্তরাষ্ট্র।

উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনার উপস্থিতি জার্মানিসহ ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে চিন্তায় ফেলছে। ২০১৪ সালের পরিস্থিতি ফিরে আসবে কি না, সে আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে।

গত সোমবার ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল ইয়েনস স্টলটেনবার্গ ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সামরিক উপস্থিতি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। যদি কিয়েভের ওপর কোনো আঘাত আসে,

সেক্ষেত্রে ন্যাটো ইউক্রেনের পাশে থাকবে বলেও সেসময় জানান তিনি। এছাড়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মুখপাত্রও ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন।

পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর ধারণা, সাম্প্রতিক এই সামরিক কর্মকাণ্ডের ফলে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। নতুন করে ইউক্রেনের মাটিতে রুশ সেনার প্রবেশ ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।