পূর্ব ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর নির্দেশ পুতিনের

উত্তেজনার ভেতরেই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই প্রজাতন্ত্র দোনেৎস্ক ও লুগানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার পর ওই দুই অঞ্চলে রুশ সেনা পাঠানোর নির্দেশে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

দুটি সরকারি ডিক্রিতে সোমবার ২১ ফেব্রুয়ারি পুতিন ওই দুই অঞ্চলে ‘শান্তি বজায়’ রাখার জন্য রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। এর আগে স্থানীয় সময় সোমবার রাতে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাকামী অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেন তিনি।

পাশ্চাত্যের দেশগুলোর সতর্কতা অগ্রাহ্য করেই এমন সিদ্ধান্ত নেয় মস্কো। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটির টিভি চ্যানেলে এক দীর্ঘ ভাষণে বলেন, আমি বিশ্বাস করি, অবিলম্বে দোনেৎস্ক ও লুগানস্কের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্তের প্রয়োজন।

এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে স্বীকৃতি ও রাশিয়ান বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ার পরে বিচ্ছিন্নতাবাদী-নিয়ন্ত্রিত শহর দোনেৎস্কের মধ্য দিয়ে ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য সামরিক যান চলাচল করছে।

রুশ-সমর্থিত ইউক্রেনীয় বিদ্রোহীরা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এলাকায় যুদ্ধ করছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি থাকা সত্ত্বেও সেখানে নিয়মিত সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।

ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা সমাবেশের কারণে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে অঞ্চলটি। সীমান্তে চলমান যুদ্ধংদেহী পরিস্থিতিতে রাশিয়া ইউক্রেনীয় বিদ্রোহীদের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেওয়া পরিস্থিতি আরও বিরূপ হয়ে উঠবে।

অঞ্চল দুটির স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেবার আগে জাতির উদ্দেশে ভাষণে ইউক্রেন সংকট প্রসঙ্গে কথা বলেন পুতিন। তিনি বলেন, ইউক্রেন লেনিনের সৃষ্টি।

সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতার নিন্দা করে তিনি আরও বলেন, লেনিন ইউক্রেনের প্রণেতা ও স্থপতি। তিনি রাশিয়াকে অসুবিধাজনক অবস্থায় ফেলেছিলেন।

ইউক্রেনের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে পুতিন বলেন, তাহলে কমিউনিজমের চিহ্ন রাখতে চান না? বেশ, আমাদের অসুবিধা নাই। তবে মাঝপথে থামবেন না। আমরা দেখাবো কমিউনিজমের চিহ্ন দূর করা কাকে বলে।

এর আগে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাকামী উভয় অঞ্চলের নেতারা রাশিয়াকে তাদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জানান। পশ্চিমা শক্তিগুলোর আশঙ্কা, তাদের স্বাধীনতার ঘোষণার মতো পদক্ষেপকে রাশিয়া প্রতিবেশী দেশটিকে আক্রমণের অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করতে পারে। সূত্র: রয়টার্স