মালদ্বীপে বাংলাদেশ দূতাবাসে গনহত্যা দিবস পালিত

আজ স্থানীয় সময় সকাল ১০ টায় যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মালদ্বীপে বাংলাদেশ দূতাবাস ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস পালন করেছে।

শুরুতে পবিত্র ধর্ম গ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ, জাতির পিতা ও তার পরিবারের শহিদদের, ৭১-এ গণহত্যার শিকার ৩০ লাখ বাংলাদেশি ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদদের জন্য দোয়া ও তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে দূতাবাস প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত কর্মসূচির সূচনা হয়।

এরপর, দিবসটি উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পাঠ করা হয়।১৯৭১-এর বর্বর গণহত্যার উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের পর গণহত্যা দিবসের উপর বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্যে দূতাবাসের প্রথম সচিব জনাব মোঃ সোহেল পারভেজ বলেন, ১৯৭১-এ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার লক্ষ লক্ষ নিরীহ বাংলাদেশিদের স্মরণ করে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

এ সময় তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস কর্তৃক পরিচালিত ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যার নিন্দা জানান এবং এই দিনকে গণহত্যা দিবস ঘোষণার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

তারা বিশ্ববাসীকে এ গণহত্যা বিষয়ে অবহিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং এই গণহত্যাকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানান ।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সদ্য মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত মান্যবর রিয়ার এডমিরাল জনাব এস এম আবুল কালাম আজাদ গণহত্যা দিবসে সকল শহিদদের জন্য শান্তি কামনা ও আন্তরিক শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ২৫ মার্চ কালোরাতে শুরু হওয়া অপারেশন সার্চলাইটের নামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিচালিত গণহত্যায় শহিদ হয়েছিল ৩০ লাখ বাংলাদেশি।

মানব জাতির ইতিহাসের ভয়ংকর ও ঘৃণ্যতম এই গণহত্যা বাঙালি জাতির অন্যতম বেদনা ও শোকের বিষয়। এই শোককে পিছনে ফেলে ৭১-এর রণাঙ্গনে বাঙালি পাকিস্তানের সুসজ্জিত হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেছে।

তিনি বলেন, শোককে শক্তিতে রুপান্তরিত করে বাংলাদেশিরা আজ বিশ্ব দরবারে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই তিনি প্রবাসীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একযোগে দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার মাধ্যমে ত্রিশ লাখ শহিদের ঋণ পরিশোধের উপর গুরুত্ব দেন এবং উপস্থিত সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথে পরিচয় পর্ব শেষ করেন।

উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- দূতাবাসের তৃতীয় সচিব জনাব মোঃ মিজানুর রহমান ভুঞা, দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারী বৃন্দ, প্রিন্ট মিডিয়ার স্থানীয় প্রতিনিধিবৃন্দ সহ আরও অনেক প্রবাসী বাংলাদেশীরা।

আলোচনা শেষে জাতির পিতা ও তার পরিবারের সকল শহিদ, জাতীয় চার নেতা, ২৫ মার্চের সকল শহিদ এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি ও অব্যাহত সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।