আদালতে সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করলেন পরীমণি

ঢাকা বোট ক্লাবে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে চিত্রনায়িকা পরীমণির করা মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার এই শুনানি শেষ হয়।

শুনানির একপর্যায়ে পরীমণি আদালতের অনুমতি নিয়ে ঘটনার দিন বোট ক্লাবে কী হয়েছিল, তা আদালতের কাছে বর্ণনা করেন।

পরীমণি আদালতে বলেন, স্যার, আসামি শাহ শহিদুল ইসলাম আমার হাত ধরে রেখেছিলেন। সেদিন অমি প্ল্যান করে বোট ক্লাবে আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন।

এ পর্যায়ে আদালত পরীমণিকে তার বক্তব্য দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিলে পরীমণি বলেন, স্যার, আমি যদি আদালতে দাঁড়িয়ে কথা না বলতে পারি, তাহলে কথা বলব কোথায়?

অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১৮ মে তারিখ ধার্য করেছেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯-এর বিচারক মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিন।

শুনানিকালে আদালতে পরীমণি উপস্থিত ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন স্বামী অভিনেতা শরিফুল রাজ। এ ছাড়া মামলার আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকী অমি ও শাহ শহিদুল আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিন আসামিই এখন জামিনে।

আসামিরা কেন অভিযোগ গঠন থেকে অব্যাহতি পাবেন, সেই যুক্তি আদালতের শুনানিতে তুলে ধরেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। অন্যদিকে, আসামিদের বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ গঠন করা উচিত, সেই যুক্তি তুলে ধরেন পরীমণি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

আদালতকক্ষ থেকে বেরিয়ে পরীমণি সাংবাদিকদের বলেন, আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। আমার সঠিক বিচার লাগবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে আমি লড়ে যাব।

২০২১ বছরের ১৪ জুন সাভার থানায় পরীমণি বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ৮ জুন রাতে তাকে কৌশলে সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে ডেকে নিয়ে যান তার পূর্বপরিচিত তুহিন।

সেখানে তাকে জোর করে মদ পান করানোর চেষ্টা করেন নাসির। একপর্যায়ে তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর নাসির, শহিদুল ও তুহিনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

ব্যবসায়ী নাসিরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলার আড়াই মাস পর গত ৪ আগস্ট বনানীর বাসায় অভিযান চালিয়ে পরীমণিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সেখান থেকে তার কথিত মামা আশরাফুল ইসলাম ওরফে দীপুকেও গ্রেপ্তার করা হয়। বাসা থেকে বিদেশি মদের খালি বোতল, বোতলভর্তি মদ, ইয়াবা, আইস ও এলএসডি জব্দ করা হয়।

তাদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক মামলা করে র‌্যাব। এরপর পরীমণিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই মামলায় তাকে তিন দফায় মোট সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

গ্রেপ্তারের ২৭ দিন পর গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর পরীমণি জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পান। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ বিচারকাজ চলছে। মামলাটি এখন সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।