প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল চেয়ে আবেদন

ভুলে ভরা প্রশ্নে নেওয়া প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল চেয়ে কামরুন নাহার নামে এক পরীক্ষার্থী লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন।

রোববার ২৪ এপ্রিল লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ডিজিটাল সেন্টারে অনলাইনে আবেদনটি দায়ের করেন তিনি। এর আগে ২২ এপ্রিল লালমনিরহাটে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

আবেদনকারী কামরুন নাহার লালমনিরহাট পৌরসভার খোচাবাড়ি এলাকার আখতারুল আলমের মেয়ে। ঢাকা ইডেন মহিলা কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে চাকরি খুঁজছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, শিক্ষকতা পেশায় নিজেকে সম্পৃক্ত করার প্রবল ইচ্ছায় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় সুযোগ নিতে অন্যদের মতো আবেদন করেন কামরুন নাহার।

ঢাকা ইডেন মহিলা কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে সরকারি চাকরির পেছনেও ছুটছেন তিনি। অসুস্থ বাবা ও ছোট ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে চাকরির ভীষণ প্রয়োজন হলেও করোনার লকডাউনে তা মেলাতে পারেননি তিনি।

এদিকে সরকারি চাকরির বয়সও শেষের দিকে কামরুন নাহারের। এরই মধ্যে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার দিন ঘোষণা করা হয়।

অনেক আনন্দ নিয়ে লালমনিরহাট সরকারি কলেজ কেন্দ্রের ২১৬ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দেন কামরুন নাহার। তার রোল নম্বর ৪১১২৬৩২, প্রশ্নের সেট ছিল সুরমা। পরীক্ষার প্রশ্ন হাতে নিয়ে বিভিন্ন ভুল দেখতে পান তিনি।

তাৎক্ষণিক হল পরিদর্শককে অবগত করে সহায়তা চান। কিন্তু তারা কোনো সমাধান দিতে পারেননি। অবশেষে ভুলে ভরা প্রশ্নের উত্তর পত্র জমা দিয়ে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফেরেন কামরুন নাহার।

কামরুন নাহার বলেন, প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ৮০ টির স্থলে ৮৩টি প্রশ্ন ছিল। ৪৪-৪৬ নম্বর ক্রমিকের প্রশ্নগুলো প্রশ্নপত্রের উভয় পাশেই রয়েছে।

প্রথম পৃষ্ঠার প্রশ্নের সঙ্গে পরের পৃষ্ঠায় বেশ কয়েকটি প্রশ্নের মিল রয়েছে। এমন ভুলে ভরা প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে বের হয়েছি। আমার মত অনেকেই পরীক্ষা শেষে এটা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। পরে জানতে পারি অন্য কেন্দ্রে সুরমা সেটে কয়েকজনের কাছে এমন ভুলের প্রশ্ন ছিল না।

তারা নির্ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছেন। তাই, কোন প্রশ্নের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হবে? , এটা নিয়ে বেশ হতাশায় পড়ে পরীক্ষা বাতিল ও পুনঃ পরীক্ষার দাবিতে নাগরিক অধিকার নিয়ে এ আবেদন করেছি। আশা করি সঠিক সিদ্ধান্ত আসবে।

জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছি। এতে কাজ না হলে প্রয়োজনে একাই আন্দোলন করে নাগরিক অধিকার আদায় করব। পরিবারকে বাঁচাতে তার চাকরির খুব প্রয়োজন বলেও দাবি করেন কামরুন নাহার।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, প্রশ্নপত্রে ভুলের বিষয়টি পরীক্ষার্থীরা জানালে পরীক্ষার দিনই অধিদপ্তরে অবগত করা হয়েছে। আজকের লিখিত আবেদনটি পেয়েছি, সেটিও অধিদপ্তরে অবগত করা হয়েছে। অধিদপ্তরই এ বিষয়ে পরবরর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। সূত্র: বাংলানিউজ।