খালেদাকে টুস করে ফেলে দেয়া মানে মৃত্যু কামনা নয় : সেতুমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের মির্জা ফখরুল ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,

সফলভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণ বিষয়ে শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য নিয়ে ফখরুল সাহেব ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ দূরভিসন্ধিমূলকভাবে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে।

শুক্রবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের দূরভিসন্ধিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই এই বিবৃতি প্রদান করেন কাদের।

কাদের বলেন, পদ্মা সেতুতে নিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেওয়ার যে কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সেটার অর্থ খালেদার মৃত্যু কামনা নয়।

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভালো করেই জানা উচিত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যদি খালেদা জিয়ার মৃত্যুই কামনা করতেন তাহলে উচ্চ আদালত কর্তৃক একাধিকবার জামিন বাতিল হওয়ার পরেও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ঘরে রেখে উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেন না।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করার সুযোগ দিতেন না। ওবায়দুল কাদের বলেন, জনকল্যাণ মুখী সৎ-সাহসী ও দেশপ্রেমিক নেতা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই একটি জাতিকে পিছিয়ে দিতে পারে না। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও পদ্মা সেতু তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

সকল প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে সফলভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এমনকি বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তথাকথিত ‘হত্যার হুমকি’র বয়ান তৈরি করছে।

তিনি বলেন, বিরোধী পক্ষকে দমন ও পীড়নের রাজনীতি আওয়ামী লীগ কোনোদিন করেনি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ১৫ আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বিএনপির হাত ধরেই হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষকে নির্মূল করার অপরাজনীতি শুরু হয়।

আর তারই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বার বার আক্রমণের শিকার হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, চিহ্নিত একটি মহলটি ক্রমাগতভাবে দেশের স্বার্থ ও জনকল্যাণ বিরোধী বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা তাঁর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দেশবিরোধী এই গোষ্ঠীর মুখোশ উন্মোচন ও জনগণ কে সতর্ক করতে চেয়েছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের একটি অনন্য মাইলফলক হলো নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ। আজকে যারা রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে অস্বীকার করার অপচেষ্টা চালান

এবং বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার পরিণতি দেখতে সুপ্ত বাসনা লালন ও ষড়যন্ত্র করেন তাদেরকে বলতে চাই- পদ্মা সেতু কেবল একটি সেতু না; এটি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জিত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার স্মারক।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করার পর থেকেই বিএনপি ও তার দোসররা এর বিরুদ্ধে ক্রমাগত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং তারা চক্রান্ত করে বিদেশি অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। এরপরও শেখ হাসিনা দেশি অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

তখন বেগম খালেদা জিয়াসহ একটি চিহ্নিত মহলের মন্তব্যগুলো ছিল কাণ্ডজ্ঞান বিবর্জিত ও দূরভিসন্ধিমূলক। এসব ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা শুধু সরকার বিরোধিতাই ছিল না বরং দেশদ্রোহিতার শামিল।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা একজন স্বপ্নবান মানুষ। যিনি বাংলার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নিরলসভাবে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বাংলার মানুষ শেখ হাসিনার মহিমান্বিত নেতৃত্বকে মূল্যায়ন করবে।

দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি-সমৃদ্ধি নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর শেখ হাসিনা ব্যতিত আর কোনো নেতৃত্বই অগাধ দেশপ্রেমের সাথে ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে কোনো সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক দর্শন ও পরিকল্পনা নিয়ে বাংলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করেননি।

তিনি বলেন, বাঙালির ভাগ্যোন্নয়নের সংগ্রামে একমাত্র শেখ হাসিনাই পরিপূর্ণ আত্মনিবেদন করেছেন। এ কথা আজ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা মানেই এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন হওয়া। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর একের পর এক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে চলেছে।