যশোরে মাস্টার ইমান আলীর ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

আজ ২৬ মে ২০২২ বৃহস্পতিবার কৃষক সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি প্রয়াত কৃষকনেতা মাস্টার ইমান আলীর ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বিকাল ৪টায় যশোর দড়াটানায় স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।

কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক তাপস বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হক লিকু, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক ও খুলনা জেলার সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, নড়াইল জেলার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির,

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট নড়াইল জেলার সভাপতি আক্তার হোসেন, যশোর জেলা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আশুতোষ বিশ্বাস, যশোর জেলার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদের যশোর জেলা সভাপতি শাহরিয়ার আমির,

জাতীয় ছাত্রদল খুলনা জেলার আহ্বায়ক সুকৃতি সরকার ও যশোর জেলার যুগ্ম-আহ্বায়ক মধুমঙ্গল বিশ্বাস প্রমুখ। কবিতা আবৃতি করেন ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ খুলনা জেলার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক। স্মরণসভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় সদস্য ও খুলনা জেলার সাধারণ সম্পাদক নিবিড় কান্তি বিশ্বাস মিঠু।

নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা মহামারী ও রুশ-ন্যাটো যুদ্ধ তথা সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সঙ্কট দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। সে আশঙ্ক্ষার প্রেক্ষিতে জনগণের খাদ্য সঙ্কট ও কর্মসংস্থান ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা ইতিপূর্বেই কৃষক ও কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপের দাবি জানিয়ে আসছি।

কিন্তু সরকার সেদিকে কর্ণপাত না করে প্রভু ও লুটপাটকারীদের স্বার্থে দেশ ‘উন্নয়ন’র মহাসড়কে চলার কথা বলে ব্রীজ, মেট্রোরেল, টানেল, মেরিন ড্রাইভ, পারমাণবিক ও কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করে ঋণের বোঝা অকল্পনীয়ভাবে বৃদ্ধি করে চলেছে।

এ ‘উন্নয়ন’ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা সৃষ্টিতে, কৃষি উৎপাদন উপকরণের মূল্য কমানোর ক্ষেত্রে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা জাতীয় স্বার্থে কোন অবদান রাখছে না এবং ভবিষ্যতেও রাখবে না। তথাপিও ঐ সকল জাতীয় স্বার্থ বিরোধী ‘উন্নয়ন’ প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ দিলেও কৃষি উৎপাদনের স্বার্থে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নাই।

যান্ত্রিকায়ন ও আধুনিকায়নের নামে যে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে তার সুবিধা একদিকে যেমন কৃষক পাচ্ছে না, অন্যদিকে বিভিন্ন এগ্রো ফার্ম ও মধ্যস্বত্বভোগীরা এ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের ভূমি কেড়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে এবং উক্ত সরকারী সুবিধার সুযোগও নিচ্ছে।

বর্তমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাতীয় স্বার্থে যেখানে কৃষিভিত্তিক শিল্প, ব্যবসা ও কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে গনমানুষের খাদ্য ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা বিধানে ভূমিকা রাখা প্রয়োজন ছিল। সেখানে সরকার শোষকশ্রেণির স্বার্থ সংরক্ষিত করার মাধ্যমে প্রমাণ করেছে এ রাষ্ট্র ব্যবস্থা শোষকশ্রেণির তথা শ্রমিক-কৃষক-জনগণের নয়।

বর্তমান বিশ্বব্যাপী সঙ্কট হচ্ছে পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার সঙ্কট। নেতৃবৃন্দ এমতাবস্থায় কৃষি বিপ্লব তথা জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষের রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতীয় সঙ্কট থেকে জনগণের মুক্তির জন্য কৃষক-জনতাকে কৃষক সংগ্রাম সমিতির ৭ দফা দাবি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।