শিক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তার পেছনে ‘পরিচালনা পর্ষদের দ্বন্দ্ব’

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ রটিয়ে নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার পেছনে শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের ‘অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের’ যোগসূত্র পাওয়া গেছে তদন্তে।

ওই ঘটনার পর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) তদন্ত কমিটি অধ্যক্ষ পদে নিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়ে কলেজে নানা দ্বন্দ্বের যোগসূত্র পেয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর অধিদপ্তরের কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক শাহেদুল খবির চৌধুরী বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের দ্বন্দ্ব এ ঘটনাকে প্রভাবিত করেছে।’

একই তথ্য এসেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও। সেই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আখতার হোসেনকে ‘নেতিবাচক ভূমিকার জন্য’ এবং কলেজের পরিচালনা পর্ষদকে ‘নির্লিপ্ততার কারণে’ কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।

গত ১৭ জুন ওই কলেজের এক ছাত্র ভারতের বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরদিন কলেজে গেলে কিছু মুসলিম ছাত্র তাকে ওই পোস্ট মুছে ফেলতে বলে। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস পুলিশে খবর দেন। এরই মধ্যে ‘অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন’ এমন কথা রটানো হলে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। অধ্যক্ষ ও দুজন শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদেরও সংঘর্ষ বাধে।

ওই সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কলেজের ছাত্র ও স্থানীয়রা শিক্ষক স্বপন কুমারের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। তখন পুলিশ ওই ছাত্রের সঙ্গে অধ্যক্ষকেও থানায় নিয়ে যায়। তবে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি।