লোকসানি প্রতিষ্ঠান বিটিসিএল ঘুরে দাঁড়িয়েছে: মোস্তাফা জব্বার

mostofa zobbar
ফাইল ছবি

ল্যান্ডফোনের গ্রাহক কমে যাওয়ায় বিটিসিএল ৪/৫ বছর আগেও বছরে ৪০০ কোটি টাকা লস করেছে। সেই বিটিসিএল এখন লাভের মুখ দেখছে। প্রযুক্তি ও পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারায় বিটিসিএল আজ ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার ইস্কাটন গার্ডেনস্থ বিটিসিএল প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে বিটিসিএল এবং বাংলালিংকের মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। এদিন বিটিসিএল এবং বাংলালিংকের মধ্যে টাওয়ার শেয়ারিং সংক্রান্ত সার্ভিস লেভেল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রধান অতিথি হয়ে উপস্থিত ছিলেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হয়ে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল মতিন এবং বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আজ এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সত্যিই একটা মাইলফলক। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে টিঅ্যান্ডটির যাত্রা শুরু এবং ১৯৭৩ সালে আইটিইউ-এর সদস্য পদ অর্জন এবং ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূকেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগের যাত্রা শুরু হয়। বিটিটিবি ছিল একসময় এদেশের টেলিযোগাযোগের মেরুদণ্ড।

এ সময় মন্ত্রী জব্বার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় জাতীয় অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে এদুটো প্রতিষ্ঠান অপটিক্যাল ফাইবার অবকাঠামো শেয়ার করেছে। বিটিসিএল যেমন তার রিসোর্স শেয়ার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তেমনই বাংলালিংক সেই রিসোর্স ব্যবহার করে আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। এতে উভয়পক্ষই লাভবান হচ্ছে। ল্যান্ডফোনে মানুষের কথা বলা কমে যাওয়ার কারণে, এর গ্রাহক কমে যাওয়ায় বিটিসিএল ৪/৫ বছর আগেও বছরে ৪০০ কোটি টাকা লস করেছে। আর এখন লাভের মুখ দেখছে। মানুষ এখন আমাকে বলছে তার এলাকায় টেলিফোন সংযোগ দরকার, সঙ্গে একটা জিপন ইন্টারনেট চাই। প্রযুক্তি ও পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারায় বিটিসিএল আজ ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার তাঁর ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব থাকাকালীন সময়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন ও বিটিসিএলের এই ঘুরো দাঁড়ানোকে অভিনন্দিত করেন। তিনি বলেন, আমরা সব সময়ই অবকাঠামো শেয়ারিংকে স্বাগত জানাই। বাংলালিংক ও বিটিসিএলের দৃষ্টান্ত অন্যরা অনুসরণ করবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

এই চুক্তির আওতায় বিটিসিএলের নেটওয়ার্ক অবকাঠামো ব্যবহার করবে বাংলালিংক। উদ্যোগটি বাংলালিংকের ফোরজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে সহায়তা করে প্রতিষ্ঠানটির সেবার মান বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া এর ফলে শক্তি সাশ্রয়ের পাশাপাশি জাতীয় সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল এ চুক্তির বিষয়ে বলেন, গত বছর থেকে আমরা বাংলালিংকের সঙ্গে আমাদের ফাইবারও শেয়ার করে আসছি। উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি ইতিবাচক ফলাফল বয়ে এনেছে। এখন দেশ এমন একটি সময় পার করছে যখন জাতীয় ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অবকাঠামো ভাগাভাগি একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে।