রাতে চিকিৎসকই পাওয়া যায় না, ওষুধের দোকান খোলা থাকবে কেন

রাতে চিকিৎসকই পাওয়া যায় না, ওষুধের দোকান খোলা থাকবে কেন: মেয়র তাপসমেয়র তাপস। ফাইল ছবি
ঢাকা: গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ঘোষিত সময়সূচির বাইরে যে কোনো ধরনের প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে। লিখিত আবেদনের মাধ্যমে যৌক্তিকতা দেখিয়ে করপোরেশনের কাছ থেকে এ অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছেন ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

মঙ্গলবার (৩০ অগাস্ট) বিকেলে নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় পরিষদের ষোড়শ করপোরেশন সভার সূচনা বক্তব্যে মেয়র এ কথা বলেন।

মেয়র তাপস বলেন, আমরা ঢাকা শহরের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে একটি সময়সূচি উপস্থাপন করেছি এবং আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এটা কার্যকর করতে চাই। সেখানে দোকান-পাট, বিপণি বিতান, কাঁচা বাজার, রেস্তোরাঁর রান্নাঘর ও খাবার সরবরাহ, চিত্ত-বিনোদনসহ প্রেক্ষাগৃহ ইত্যাদির জন্য সমসয়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ওষধের দোকানগুলোর জন্য বিশেষভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাড়া-মহল্লার ওষুধের দোকানের জন্য আমরা রাত বারোটা পর্যন্ত সময় দিয়েছি এবং হাসপাতালের সঙ্গে যে ওষুধের দোকানগুলো রয়েছে- সেগুলোকে রাত দুইটা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে যদি কোনো ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও ব্যাবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে চায়, তাহলে ডিএসসিসির কাছে লিখিতভাবে আবেদন করতে হবে। সেখানে তাদেরকে তার প্রতিষ্ঠান বা কার্যক্রম কেন অত্যাবশ্যকীয়, সেটা যথাযথ যুক্তি দেখাতে হবে। আমরা সেটা বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা কার্যক্রমকে বর্ধিত সময় দেবো। কিন্তু ঢাকা শহরকে একটি সুনির্দিষ্ট সময়সূচির মধ্যে আনতেই হবে।

হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার বিষয়ে বিচ্ছিন্নভাবে নানা মাধ্যমে আলোচনা হলেও করপোরেশন এখনো কোনও পক্ষ বা ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো আবেদন পায়নি বলে জানান মেয়র তাপস। তিনি বলেন, ঘোষিত গণবিজ্ঞপ্তির সময়সূচি ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। শুধুমাত্র হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ওষুধের দোকানগুলো খোলা রাখার বিষয়ে বিভিন্নভাবে বলা হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট অংশীজন যারা আছেন, তারা কিন্তু আমাদের কাছে কোনো লিখিত আবেদন করেননি।

পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিশ্চিত না করে ২৪ ঘণ্টা ওষুধের দোকান খোলা রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন রাখেন মেয়র। তিনি বলেন, হাসপাতালে সংযুক্ত ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার যৌক্তিকতা আমরা দেখি না। কারণ, যেখানে রোববার থেকে বৃহস্পতিবারে সুনির্দিষ্ট সময়ের পর, শুক্র-শনিবার এবং রাতের বেলা চিকিৎসকই পাওয়া যায় না, সেখানে ওষুধের দোকান কেন খোলা রাখা হবে? আগে তো চিকিৎসক নিশ্চিত করতে হবে। তারপরই তো চিকিৎসা সেবার জন্য ওষুধের দোকান খোলা রাখার ব্যাপার। তারপরও কোনো হাসপাতাল থেকে যদি লিখিত আবেদন আসে, আমরা অবশ্যই সেটা বিবেচনা করব।

ঘোষিত সময়সূচি বাস্তবায়নে কাউন্সিলরদের নির্দেশনা দিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আপনারা অবশ্যই এই সময়সূচি নিশ্চিত করবেন। এলাকা, পাড়া-মহল্লায় যাতে সবাই সূচি মেনে কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করে, সেটি নিশ্চিত করবেন। এর ব্যত্যয় হলে আমরা আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেব। সেলক্ষ্যে আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।

সময়সূচির সঙ্গে ডিএসসিসির আনুষঙ্গিক কার্যক্রম ও শহরের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত উল্লেখ করে মেয়র বলেন, শুধু অবকাঠামো উন্নয়নেই একটি শহরকে পরিচালনা করা যায় না। তার সঙ্গে সঙ্গে আনুষঙ্গিক যত বিষয় রয়েছে- সেগুলোরও সংযোগ রয়েছে। সুনির্দিষ্ট সময়সূচির সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনা জড়িত। যখন সবকিছু একটি সূচির আওতায় আসবে তখন আমরা কার্যক্রমগুলো আরও সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে পারব। ঢাকাবাসীকে ফলপ্রসূ ও কার্যকর সেবা দেওয়ার পাশাপাশি একটি উন্নত ঢাকা উপহার দিতে পারব।

ডিএসসিসির সচিব আকরামুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও কাউন্সিলররা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।