যশোরে ছুরিকাঘাতে নিহত যুবকের পচিয় মিলেছে থানায় মামলা আটক ২

যশোরের চাঁচড়ায় দূর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত যুবকের পরিচয় মিলেছে। তার নাম মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি সাতক্ষীরা জেলার সুলতানপুর শাহাপাড়ার আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার। মোস্তাফিজ হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার ভাই আব্দুল মোত্তালিব (৩৯) সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা আরো ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হচ্ছে ইসহক গাজির ছেলে ইব্রাহিম (২৩) শামীম হোসেনের ছেলে ইমরান (২৫) আসলাম হোসেনের ছেলে সুজন হোসেন (২২) মিঠুর ছেলে আল আমিন (২৪) মৃত অনিল মন্ডলের ছেলে অন্তর মন্ডল (২৬) ও মৃত শরিফুল ইসলামের ছেলে রাব্বি হাসান (২৩)। আসামীদের সবার বাড়ি সদরের বিরামপুর কালীতলা গ্রামে। আসামিদের মধ্যে দুইজনকে পুলিশ আটক করে। আটককৃতরা হচ্ছে অন্তর মন্ডল ও রাব্বি হাসান। আটককৃতদের জবানবন্দি গ্রহনের জন্য আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মামলায় আব্দুল মোত্তালিব বলেছেন, তার আপন ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান ডিভিশনাল সেলস ম্যানেজার হিসেবে চাকুরি করতো। পরিবার নিয়ে সাতক্ষীরা সদরের কলেজপাড়া এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতো। ৪ সেপ্টেম্বর সকালে মোস্তাফিজ ভাড়া বাসা থেকে কোম্পানির কাজে বাইরে যায়। ওই দিন বেলা ১২ টায় মোস্তফিজের মোবাইলে কল দিলে ঝিনাইদহে আছে বলে জানায়। পরে মোস্তাফিজের স্ত্রী জান্নাতুল মোবাইলে কল দিলে বাড়ি আসছে বলে জানায়। মোস্তাফিজ বাড়ি না আসায় ওই দিন সন্ধ্যায় মোস্তাফিজের স্ত্রী জান্নাতুল, আািম ও আমার নিকট আতœীয় স্বজন মোস্তাফিজের মোবাইলে কল দিলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তখন আশে পাশের এলাকাসহ নিকট আতœীয় স্বজনের কাছে খোঁজ নিয়ে মোস্তাফিজুরের কোন সন্ধান পায় না। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে মোস্তাফিজের সহকর্মী রবিউল ইসলামের কাছে মোবাইল করলে সে জানায় যমোর থেকে এক ব্যক্তি তাকে জানিয়েছে, মোস্তাফিজকে ছুরি মেরেছে। বর্তমানে মোস্তাফিজ সদর হাসপাতালে আছে। এ খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক আমি আমার ভাইয়ের স্ত্রী ও শ্বশুরকে নিয়ে সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে যায়। সেখানে আমার ভাই মোস্তাফিজুরের কথা জিজ্ঞাসা করলে কর্তৃপক্ষ জানায়, মোস্তাফিজুর নামে এক ব্যক্তি ছরিকাঘাতে মৃত্যু বরন করেছে। তার লাশ মর্গে আছে। আমরা হাসপাতালের মর্গে যেয়ে মোস্তাফিজুরের লাশ সনাক্ত করি। মোস্তাফিজুরের বাম পায়ের উরুতে দুইটি জখমের ক্ষত চিহ্ন দেখা গেছে। মর্গে উপস্থিত লোকজনসহ স্থানীয়দের কাছে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি আসামি ইমরানের সাথে কোম্পানীর পাওনা টাকা নিয়ে আমার ভাই মোস্তাফিজুরের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে ৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে পরস্পর যোগ সাজসে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ইমরান ও তার ৩/৪ জন সহযোগি আমার ভাই মোস্তাফিজকে ডেকে নিয়ে চাঁচড়া চেকপোস্ট নিউ নুর হোটেলের সামনে থেকে জোর পূর্বক রাব্বি হাসানের ইজিবাইকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর হত্যার উদ্দেশ্যে চাকু দিয়ে আঘাত করে মোস্তাফিজকে রক্তাত্ত জখম করে। আসামিরা মোস্তাফিজকে রক্তাত্ত অবস্থায় মোস্তাফিজকে ইজিবাইকে করে জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখে পালিয়ে যায়। ৪ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫ টায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার আহমেদ তারেক শামস মোস্তাফিজকে মৃত ঘোষনা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকতাৃ চাঁচড়া ফাঁড়ির এস আই আনিছুর রহমান জানান, মোস্তাফিজ হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি অন্তর মন্ডল ও রাব্বি হাসানকে সোমবার দুপুরে সদরের বাহাদুরপুর গ্রাম থেকে আটক করা হয়। আটককৃতদের সিনিয়ির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলামের আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দি শেষে আসামি দুজনকে জেলহাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেয়া হয়।