যশোরে ভেজাল দস্তাসারের কাঁচামাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে

jessore map

 

যশোর সদর উপজেলার কৃষি অফিসারের অব্যাহত অভিযানে ভেজাল দস্তা সার উৎপাদনকারীরা চরম বিপাকের মধ্যে পড়েছে। সার উৎপাদনের ভরা মৌসুমে উৎপাদন করতে না পেরে হায়হুতাশ করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তারপরও যারা ভেজাল দস্তাসার উৎপাদন করে আজ লাখোপতি থেকে কোটিপতির কাতারে অবস্থান করছে তারাও বসে নেই সুযোগ কাজে লাগানো ক্ষেত্রে।

অপরদিকে,ভেজাল দস্তা সারের উপকরণ বিক্রেতা সব সময় থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। ভেজাল দস্তাসারের বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করলে যশোর সদরের ৪নং নওয়াপাড়া ইউনিয়নে গড়ে ওঠা ভেজাল দস্তাসার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এই ব্যবসা থেকে সরে দাঁড়ানোর চিন্তা ভাবনা করতে পারে বলে শোনা গেছে।

বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে,যশোর সদরের ৪নং নওয়াপাড়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে ভেজাল দস্তাসার উৎপাদনকারীরা কারখানা সৃষ্টি করে তাদের কারবার চালিয়ে আসছে। ভেজাল দস্তাসার উৎপাদনের বিরুদ্ধে সদর উপজেলা কৃষি অফিসের এক কর্মকর্তা,ভোক্ত অধিকার সংরক্ষণ কর্মকর্তা সোচ্চার ভূমিকা নিলেও ভেজাল দস্তাসার উৎপাদন চিরতরে বন্ধ করতে পারছেনা।

তার কারণ হিসেবে সূত্রগুলো বলেছে, ভেজাল দস্তাসার উৎপাদনে যে উপকরণ প্রয়োজন সেগুলো সরবরাহ প্রতিষ্ঠান ইমরান এন্টার প্রাইজ এর মালিক ইমরান সব সময় থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। গোটা নওয়াপাড়া ইউনিয়নে ভেজাল দস্তাসার কারবারীদের মাস্টার মাইন্ড ইমরান ভেজাল দস্তা সার কারখানায় উপকরণ সরবরাহ করলে ভেজাল দস্তা সার উৎপাদন হয়। বর্তমানে এই ইউনিয়নে ভেজাল দস্তাসার উৎপাদন সাময়িত বন্ধ থাকলেও পরবর্তিতে পুনরায় চালু হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। সূত্রগুলো বলেছে, ইমরানের পূর্বে শেখহাটি জামরুল তলা বাজারে একটি সারের দোকান ছিল। বর্তমানে সে যশোরে কথিত ভেজাল ৮টি সার কারখানায় কাঁচামাল সরবরাহ করে । ইমরানের কাঁচামালের তালিকায় রয়েছে, টাইলসের গাদ,চুন পাউডার, সিলেকশন বালি, সোডিয়াম বা লবন, সিরামিকের পাউডার,পাথর কুচি,ডলোমাইট,সিমেন্টসহ বিভিন্ন মালামাল। এ সময় উপকরণ কৃষি কাজের জন্য চরম ক্ষতিকরন। সূত্রগুলো দাবি করেছেন,ইমরানের বর্তমানে কোন সার কারখানা থাকলেও সে বিভিন্ন কারখানা থেকে ভেজাল দস্তাসার ক্রয় করে বিক্রয় করে থাকেন।

সূত্রগুলো আরো দাবি করেছেন, ইমরানের পূর্বে একটি গোডাউন থাকলেও বর্তমানে তার দু’টি গোডাউন রয়েছে। সে বিভিন্ন সার কোম্পানীর ডিলার নিয়ে তাদের অজান্তে তাদের প্যাকেট ছাপিয়ে ভেজাল দস্তাসার পুরে বিক্রি করে থাকে। ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে বিভিন্ন সময় সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। অপরসূত্র বলেছে,সদরের আড়পাড়া সাহাপুর গ্রামের জুনায়েদের বাগানে আজিজুল ইসলাম ও তরিকুলের ভাড়া করা ভেজাল দস্তাসার কারখানায় সদরের কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন এক সপ্তা ব্যবধানে দু’দিন অভিযান চালিয়ে ভেজাল দস্তা উৎপাদনকারী কথিত সার কারখানার দরজা ও জ্বানালা ভেঙ্গে খুলে নিয়েছেন। ভেজাল দস্তাসার উৎপাদন করে লাখোপতি ও কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নে আজিজুল ও তরিকুল বিভোর হয়ে যেভাবে হোক ভেজাল দস্তাসার উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন শুরু করেছেন। এছাড়া, ভেজাল দস্তাসার বিক্রি সিন্ডিকেটের সদস্যরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

টনটন ভেজাল দস্তাসার বাকীকে কিনে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা শহরে সরবরাহ করে সেখান থেকে হাজার হাজার টাকা উপার্জন করে কারখানার মালিককে দিয়ে নিজেদের পকেটে ভরতো। বর্তমানে সদর উপজেলা কৃষি অফিসারের অব্যাহত অভিযানের ফলে তারা এক রকম দারুন কষ্টে দিনাতিপাত করছে। অনেকে বলাবলিকরছে,ভেজাল দস্তাসার সিন্ডিকেটে ১০ থেকে ১৮ জন সদস্য রয়েছেন। যারা ভেজাল দস্তা সার বাকীকে ক্রয় করে বিক্রি করে ইতিপূর্বে লাখোপতি হয়ে গেছেন। ইতিপূর্বে ভেজাল দস্তা সার টনটন বিক্রি করে যে টাকা উপার্জন করেছেন সেগুলো ভেঙ্গে ভেঙ্গে খাচ্ছে। নতুন করে আয়ের উৎস বন্ধ হতে চলেছে।