ক্লাইমেট ইস্যুতে আমরা লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জাতিসংঘের চলতি অধিবেশনে বাংলাদেশের নেতা শেখ হাসিনা কী বার্তা দেবেন তা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এ মোমেন বলেন, কভিড১৯ সদস্য, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য এবং জ্বালানি নিরাপত্তা সমস্যা-তা কোনো একক দেশ সমাধানে সক্ষম নয়। সেজন্যে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করা উচিত। এমনকি বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে যে স্যাঙ্কশন দেয়া হয়, সেগুলোও সবাইকে নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে করলে সাধারণ নাগরিকরা অসুবিধায় কম পড়বে। এটা হবে জাতিসংঘে চলতি অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধান বার্তা।
এর পাশাপাশি আমরা ক্লাইমেট ইস্যু উপস্থাপন করবো। কারণ আমরা হলাম ক্লাইমেট ইস্যুতে লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড। আমরা রোহিঙ্গা ইস্যুটি আরও জোরালোভাবে উপস্থাপন করবো।

জাতিসংঘে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আলোকে ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ম্যানহাটানে ‘লটে প্যালেস’ হোটেলে স্থাপিত বাংলাদেশ মিশনের কন্ট্রোল রুমে প্রেস ব্রিফিংকালে ড. মোমেন আরও উল্লেখ করেন, গত ১৩ বছরে বাংলাদেশের যে অভাবনীয় সাফল্য-সে সম্পর্কে সকল ফোরামে আমাদের বক্তব্য বিস্তারিতভাবে তুলে ধরবো। এটা সকলেরই জানা যে, বাংলাদেশ হচ্ছে গোটাবিশ্বে নারী ক্ষমতায়নে লিডার। সে কথাও তুলে ধরবো।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আরো একটি বিষয় বিশেষভাবে তুলে ধরবো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষণা দিয়েছেন যে বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। যাদের জমি নেই, গৃহ নেই-প্রত্যেককে জমিসহ গৃহ দেয়া হবে। ইতিমধ্যেই সেই কর্মসূচির আওতায় ১০ লাখের বেশী মানুষকে জমির মালিকানা দলিলসহ গৃহ তৈরী করে দেয়া হয়েছে। একজন মানুষ যখন জমিসহ গৃহ পায় তখন তার মনে যে শান্তি তা অকল্পনীয়। এই কর্মসূচির কথা ব্যক্তকালে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাবো যেন কোন দেশেই মানুষ গৃহহীন না থাকেন। এসবই হবে জাতিসংঘে বাংলাদেশের নেতা শেখ হাসিনার গুড মেসেজ। এবং আমি মনে করছি আপনারা সকলে তার প্রশংসা করবেন। দিস ইজ এ নিউ মডেল, শেখ হাসিনা প্রমোটিং থ্রো-আউট দ্য ওয়ার্ল্ড’-যোগ করেন ড. মোমেন।
এ সময় তার পাশে ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মোহিত, প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সাখাওয়াত মুন, বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) নূরএলাহি মিনা।

এর আগে দিনব্যাপী প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি আলোকে লিখিত বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, নিউইয়র্ক পৌঁছানোর পর মঙ্গলবার ছিল প্রথম দিন। সারাদিন প্রধানমন্ত্রী কর্মব্যস্ত একটি দিন কাটিয়েছেন। সকাল হতে প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে বিভিন্ন সভা ও অধিবেশনের সাইডলাইনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগদান করেন।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। এসময় বাংলাদেশে কক্সবাজার ও ভাষানচরে আশ্রিত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় UNHCR এর বর্তমান কার্যক্রমসমূহনিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী বাস্তুুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ও এ সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের সংস্থাসমূহের আরও জোরদার ভূমিকা পালনের উপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষ করে, তিনি মিয়ানমারে UNHCR এর কার্যক্রম বৃদ্ধির উপর জোর দেন। এর প্রত্যুত্তরে হাইকমিশনার বলেন যে, তিনি শিগগিরই মিয়ানমার সফর করবেন।

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান করা সম্ভব বলে প্রধানমন্ত্রী তার মতামত পুনর্ব্যক্ত করেন। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রীর সাথে এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন।