যশোরে দুর্নীতিবাজ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু মাউদের রক্ষার চেষ্টা

করোনা কালীন সময়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের টাকা আত্মসৎসহ অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনায় দায়সারা তদন্ত সম্পন্ন করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদের রক্ষা করতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ একট্টা। অভিযুক্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদের স্বপদে বহাল রেখে এবং তার দপ্তরে এই তদন্ত করাকে অনেকেই দায়সারা ও পাতানো বলেছেন।
সূত্র জানায়, যেসব গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে তাদের অনেকে ডাকা হয়নি। ফলে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করেনি তদন্ত কমিটি।
এদিকে, মীর আবু মাউদ তার বিরুদ্ধে কারা সংবাদ মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করেছে এমন সন্দেহে কয়েকজন স্বাস্থ্য সহকারীকে শাসিয়েছেন। করো কারো নামে সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে তাদের মানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদের বিরুদ্ধে করোনা কালীন সময়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এ ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির প্রধান করা হয় ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেলকে। কমিটির সদস্য করা হয় চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকি ও অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ওয়াহিদুজ্জামানকে। মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বুধবারও তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম চালায়।
স্বাস্থ্য সহকারীরা অভিযোগ করেন, যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদের স্বপদে বহাল রেখে তার দফতরে তদন্ত করার কারণে অনেকে সত্য প্রকাশ করতে পারেনি। তদন্ত কমিটি আগে থেকে লিখিত প্রশ্ন বানিয়ে আনে। গদবাঁধা এবং আগে থেকে ঠিক করা প্রশ্ন করার কারণে সঠিত তথ্য বের করতে ব্যর্থ হয়েছে তদন্ত কমিটি।
তারা আরো জানান, তদন্তের দিন লাঠিয়াল বাহিনী পুরো সদর উপজেলায় আগে থেকে অবস্থান নেয়। এছাড়া আগে থেকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সহকারীদের হুমকি-ধামকি প্রদান করে ডা. মীর আবু মাউদের পক্ষে স্বাক্ষ দেওয়ার জন্য তার বাহিনী। এছাড়া রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও আমলাদের দিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের মাউদের পক্ষে স্বাক্ষ্য দেওয়ার জন্য বলা হয়। যে কারণে এই তদন্ত কমিটি সত্য তথ্য বের করতে ব্যর্থ হয়েছে। তদন্ত কমিটি স্বজনপ্রীতি করেছে। বলা যায়, এটি মাউদের রক্ষা করার তদন্ত কমিটি। আর যেটা অনেক আগেই স্বাস্থ্য সহকারীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল।
তদন্ত কমিটির প্রধান ডপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেল বলেন, আমরা সরেজমিনে তদন্ত করছি। তদন্ত কমিটি যেখানে মনে করবেন সেখানে তদন্ত করতে পারে। আমরা লিখিত বক্তব্য নিচ্ছে। যার যে বক্তব্য আছে তারা সেটি লিখিত দিতে বলা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, এখনো তদন্ত সম্পন্ন হয়নি। তদন্ত কমিটি শুধু উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার একটি রুম ব্যবহার করেছে।