ঔপন্যাসিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন

আজ সাতাশিতে পা রাখলেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় এবং জীবন্ত কিংবদন্তি ঔপন্যাসিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমান বাংলাদেশ) ময়মনসিংহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তবে তার পৈতৃক নিবাস ছিলো ঢাকার বিক্রমপুরে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর ১১ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে পাড়ি জমান কোলকাতায়। ভারতীয় রেলে পিতার চাকুরির সুবাদে ঘুরেছেন পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, আসামসহ বিভিন্ন জায়গায়। কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করার পর স্কুল শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন শীর্ষেন্দু। একটা সময়ে তিনি ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ এবং ‘দেশ’ পত্রিকায় যোগদান করেন।

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের জীবনের প্রথম দুটি গল্প ফেরত এসেছিল জনপ্রিয় পত্রিকা ‘দেশ’র দপ্তর থেকে। তৃতীয় লেখা পাঠানোর পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যদি এটি ছাপা না হয়, তবে লেখালেখিই ছেড়ে দেবেন। ‘দেশ’ পত্রিকায় ১৯৫৯ সালে প্রকাশিত ‘জলতরঙ্গ’ নামে সেই তৃতীয় গল্পটিই ছিল শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ছাপা হওয়া প্রথম লেখা। সাত বছর পর ঐ একই পত্রিকার শারদ সংখ্যায় তার প্রথম উপন্যাস ‘ঘুণ পোকা’ প্রকাশিত হয়। মানবজমিন, জমাখরচ, গয়নার বাক্স, বন্ধুর অসুখ, গোলমেলে লোক, আসমানির চর, বড়সাহেব, হীরের আংটি, শেষবেলায়, নেকলেস, সাঁঝের বেলা, বৃষ্টিতে নিশিকান্ত, সংলাপ, ফেরীঘাট তার উল্লেখযোগ্য রচনা। ‘শবর দাশগুপ্ত’ তার সৃষ্ট বিখ্যাত একটি গোয়েন্দা চরিত্র।

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বেশ কিছু উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র সেগুলি হল– বাঁশিওয়ালা, গয়নার বাক্স, হীরের আংটি, পাতালঘর, গোঁসাই বাগানের ভূত, মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি, আশ্চর্য প্রদীপ প্রভৃতি। বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বিভিন্ন পুরস্কার এবং সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যাসাগর পুরস্কার, সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার, বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার, আনন্দ পুরস্কার প্রভৃতি।