জেলাপর্যায়ে সমাবেশের সিদ্ধান্ত গণতন্ত্র মঞ্চের

জেলাপর্যায়ে সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। আগামী ১৮ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে সমাবেশের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে জেলার কর্মসূচি শুরু হবে। ২৫ নভেম্বর সমাবেশ করবে বগুড়ায়। এছাড়া বিএনপির সঙ্গে আগামী সপ্তাহের ১৪ থেকে ১৬ নভেম্বরের যে কোনো একদিন মতবিনিময় করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ জোট।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়াও সভায় গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে। দুমাস পরপর সমন্বয়কের দায়িত্বে নতুন নেতা নির্বাচন করা হবে যুগান্তরকে বলে জানিয়েছেন জোটের একাধিক নেতা।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর, জেএসডির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিন্নুর চৌধুরী দিপু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাকিব আনোয়ার, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান ও ফারুক হাসান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আনসার আনসার আলী দুলাল, জেএসডির কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাবিবুর রহমান, হাসিব উদ্দীন হোসেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আখতার হোসেন ও মো. মুহিবুল্লাহ বাহার, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু প্রমুখ।

গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় নেতৃবৃন্দ রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে বাধা, সব ধরনের পরিবহণ বন্ধ করে দেওয়াসহ দমন-পীড়ন, হামলা-মামলা, গ্রেফতারের নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে খোদ প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানোর হুমকি কিংবা বিএনপিসহ বিরোধী দলের ‘হেফাজতের পরিণতি’ করার হুমকির নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ ভাষাই বলে দেয় সরকার রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে।

নেতারা বলেন, জনগণের সম্মতি ছাড়া ক্ষমতাসীন এ সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট এবং অব্যবস্থাপনার জন্য দেশের অর্থনীতি আজ চরম সংকটে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের নিম্নবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্ত শ্রেণিও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। লুটেরা সরকার আর তার দোসরদের অর্থ এবং ক্ষমতা লিপ্সার কারণে দেশ আজ এক গভীর সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকির মুখে।

লোডশেডিংয়ে সারা দেশের মানুষ অতিষ্ঠ। জ্বালানি সংকটের কারণে কল-কারখানা এমনকি সার কারখানা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সংকটের দায় এবং পরিস্থিতি মোকাবিলার ব্যর্থতা সম্পূর্ণভাবে সরকারের। কাজেই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জনগণের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার। সরকার, বাস মালিক সমিতিকে দিয়ে ধর্মঘট ডেকে এবং পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে দমন-পীড়ন, হামলা-মামলা-গ্রেফতারে চালিয়ে আবারো প্রমাণ করলো বলপ্রয়োগ করে জবরদস্তি করে ফ্যাসিবাদী কায়দায় তারা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চায়।

নেতারা আরও বলেন, এভাবে দমন করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা যাবে না। জনগণের অভ্যুত্থানে এ সরকারের পতন ঘটবে। তারা সরকার ও শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে এবং সব অত্যাচার দমন, পীড়ন, নির্যাতন এবং হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে আগামী ১০ নভেম্বর নুর হোসেন দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও এদিন বেলা ১১টায় পল্টন মোড়ে গণতন্ত্র সমাবেশ করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।