বাংলাদেশ-ইইউ সংলাপ আজ

বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে প্রথম রাজনৈতিক সংলাপ আজ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিকালে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও মানবাধিকারের বিষয় গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইইউ প্রতিনিধি দলের প্রধান এনরিকে মোরা ইরানের সঙ্গে ইইউর আলোচনা নিয়ে ব্যস্ততার কারণে কয়েক দফা পেছানোর পর শেষ পর্যন্ত আজ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এবারের বৈঠককে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

ইইউ প্রতিনিধি দলটি বুধবার ঢাকায় পৌঁছেছে। রাজনৈতিক সংলাপে ইইউ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন এনরিকে মোরা। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেলের চিফ অব স্টাফ এবং ইউরোপীয় এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল। স্প্যানিশ কূটনীতিক এনরিকে মোরা ইরানের সঙ্গে আলোচনায় ইইউর প্রধান আলোচক।

এনরিকে মোরার মতো একজন দক্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ কূটনীতিককে প্রতিনিধি দলের প্রধান করায় ইইউ বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম সংলাপকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

কোভিড মহামারির কারণে বাংলাদেশে বিদেশি কূটনীতিকরা গত দুই বছর তেমন কোনো তৎপরতা চালাতে পারেননি। বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় কূটনীতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ঘরোয়া আলোচনা হচ্ছে।

তবে কোনো কোনো কূটনীতিক ঘরোয়া আলোচনার বাইরেও কোনো অনুষ্ঠানে রাজনীতি, নির্বাচন, মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা অভিমত ব্যক্ত করছেন।

বাংলাদেশ সরকারের তরফে বিদেশি কূটনীতিকদের স্পর্শকাতর ইস্যুতে প্রকাশ্যে মন্তব্য করাকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং শিষ্টাচারবহির্ভূত বলে মনে করা হয়।

ঢাকায় নিযুক্ত একজন পশ্চিমা কূটনীতিক সম্প্রতি যুগান্তরকে বলেছেন, বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের প্রতি তাদের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। কারণ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল। তবে তিনি এও মন্তব্য করেন যে, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিজেরা মূল্যায়ন করছেন। ওই কূটনীতিকের মতে, বাংলাদেশে নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ে এখনই কোনো উপসংহারে যাওয়ার সময় আসেনি।

পরিস্থিতি অনুধাবনে আরও অপেক্ষা করতে হবে। রাজনৈতিক সংলাপে আঞ্চলিক পরিস্থিতির প্রতিও আলোকপাত করা হবে।

বিশেষ করে শ্রীলংকার অর্থনৈতিক সংকট, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির মতো বিষয় বর্তমানে বিভিন্ন মহলে আলোচনায় আছে।

আঞ্চলিক পরিস্থিতি বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব ফেলছে, সেটাও আলোচনা হতে পারে। এছাড়া আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে ইউক্রেনে রুশ হামলার বিষয়ও আলোচনার এজেন্ডায় রাখছে ইইউ।