যশোরে নিয়োগে বাণিজ্যে কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে

Jessore map

হিউম্যান এ্যাডুকেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (হিডো’র) নামে যশোর সদর উপজেলা বাদে সাত উপজেলায় ভলেন্টিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সেবা প্রদানের নামে ২শ’ ৯৩জন টার্গেট জনবলের কাছ থেকে অবৈধভাবে উৎকোচ আদায়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে।

হিডো’র নির্বাহী পরিচালকের সাথে যশোরের সিভিল সার্জনের চুক্তিপত্র হলেও নিয়োগ বানিজ্যে নেমে পড়েছেন হিডো’র সভাপতি দাবিদার লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ। কেঁচো খুছতে সাপ বেরিয়ে এসেছে। হিডো’র সভাপতি দাবি করে যশোর ঝিনাইদহ,কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলার উপজেলাগুলিতে জনবল নিয়োগের পায়তারা শুরু করার প্রতিবাদ করায় হিডো’র নির্বাহী পরিচালক ফারুক হোসেন ঢাকা মেট্টো পলিটন থানা পল্লবী ও ঝিনাইদহ সদর থানায় সাধারণ ডাইরীভূক্ত করেছেন। লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ জনবল নিয়োগের জন্য খুলনা বিভাগীয় ও যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নাভারণ এলাকায় এজেন্ট নিয়োগ করেছেন। যাদের মাধ্যমে হিডো’র নামে দেশের বিবিন্ন সরকারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলিতে ডাক্তারের এটেনডেন্ট,ওয়ার্ড মাষ্টারসহ ১৪টি পদে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

ইতিমধ্যে হিডো’র নামে নিয়োগ বাণিজ্যে এই চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা। এই চক্রের হাতে টাকা দিয়ে অনেকে যাচাই বাছায় করতে এসে নিশ্চিত হচ্ছেন সরকারী প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করলেও কখনও সরকারী হবে না নতুন জনবলের ওইসব পদগুলি।

সূত্রগুলো বলেছেন,যশোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপ্লব কান্তি বিশ^াসের সাথে হিডো’র নির্বাহী পরিচালক ফারুক হোসেনের নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে ২৯৩টি পদের জন্য একটি চুক্তিপত্র হলেও সম্প্রতি শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার এটেনডেন্ট পদে নিয়োগ দিয়েছেন হিডো’র সভাপতি দাবিদার লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ। শার্শা উপজেলার ধলদাহ গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে মারুফ হোসেনকে গত ৩ নভেম্বর লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ স্বাক্ষরিত ডাক্তার এটেনডেন্ট পদে নিয়োগ দেন। উক্ত নিয়োগের ব্যাপারে যশোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপ্লব কান্তি বিশ^াস অবগত নন।

তাছাড়া, ভলেন্টিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সেবা প্রদানের বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগের ব্যাপারে যশোরের সিভিল সার্জনের সাথে চুক্তি হয়েছে নির্বাহী পরিচালক দাবিদার ফারুক হোসেন। অথচ নিয়োগপত্র দিয়ে গত ৩ নভেম্বর থেকে ১২ নভেম্বরের মধ্যে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের এটেনডেন্ট পদে নিয়োগপত্র দিয়েছেন হিডো’র সভাপতি দাবিদার লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ। সূত্রগুলো বলেছেন, জনবল নিয়োগ বাণিজ্যে সভাপতি দাবিদার লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ খুলনা বিভাগীয় দায়িত্ব দিয়েছেন ইমরুলকে আর যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নাভারণ ইউনিয়ন বাইসা ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বর বাবলুকে দায়িত্ব দিয়েছেন মাথাপিছু মোটা অংকের বিনিময়ে জনবল সংগ্রহ করতে।

শুধুতাই নয়, হিডো’র সভাপতি দাবি করে লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের সাথে যোগাযোগ করে ওই জেলায় জনবল ভলেন্টিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সেবা প্রদানে বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগের ব্যাপারে আলোচনা করে হিডো’র প্যাড ও রেজিষ্ট্রেশন সন্দেহ হলে তিনি কুষ্টিয়া জেলা সমাজ সেবার কার্যালয়ের রেজিষ্ট্রেশন দেখে সেখানে রেজিষ্ট্রেশনকৃত হিউম্যান এ্যাডুকেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (হিডো) নামক এনজিও এর বিষয় তথ্য প্রদান সংক্রান্ত পত্র দেন।

কুষ্টিয়া জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ মুরাদ হোসেন সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্মারক নং সি.এস/সাত/শা-/২০২২/৪৪২৫ তারিখ ১৪/০৮/২০২২ ইং এক স্মারক পেয়ে যাচাই বাছায় করে গত ৩১ আগষ্ট স্বাক্ষরিত সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জনের পত্রের মাধ্যমে বিষয় বর্ণিত এনজিও সম্পর্কে চাহিত বিভিন্ন তথ্যদি প্রদান করে উল্লেখ করেন,হিউম্যান এ্যাডুকেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন গ্রাম মিরপুর,ডাকঘর, মিরপুর, উপজেলা মিরপুর জেলা কুষ্টিয়া (নিবন্ধনকালীন ঠিকানা) নিবন্ধন নংকুষ-৭৮৮/০৭,তারিখ ১৭/১২/২০০৭ইং। এ কার্যালয় থেকে নিবন্ধিত সংস্থাটির বর্তমান ঠিকানা মিরপুর বাসস্ট্যান্ড, উপজেলা,মিরপুর,জেলা-কুষ্টিয়া।সংস্থাটির এ কার্যালয় থেকে অনুমোদিত সর্বশেষ কার্যনির্বাহী পরিষদের মেয়াদ (১৯-০৭-২০২০ হতে ১৮-০৭-২০২২) পর্যন্ত উর্ত্তীণ হয়েছে। চাহিত তথ্যের ছকে উল্লেখিত জনাব লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ কর্তৃক হিউম্যান এ্যাডুকেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (হিডো’র) রেজিষ্ট্রেশন নং কুষ -৭৭৮/০৭ সঠিক নয় বলে কুষ্টিয়া সমাজ সেবা জেলা কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে। তাছাড়া, ফয়েজ কর্তৃক কার্য নির্বাহী পরিষদ (১৯-০৭-২০২০ ইং হতে ১৮-০৭-২০২২ তারিখ পর্যন্ত) কুষ্টিয়া সমাজ কার্যালয় থেকে অনুমোদিত নয়।

এছাড়া,কুষ্টিয়া সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপপরিচালকের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে করা হয়েছে যা তৎকালীন উপ-পরিচালকের প্রকৃত স্বাক্ষরের সাথে বিস্তর গড় মিল রয়েছে এবং কোন স্বারক নম্বর নেই। হিডো’র কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলায় পরিচালিত কার্যক্রমের বিষয়ে বর্তমান উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) অবহিত নয়। নিয়োগ বানিজ্যে নেমে পড়ার খবরে হিডো’র নির্বাহী পরিচালক দাবিদার ফারুক হোসেন গত ১৮ জুলাই ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ পল্লবী থানায় ও গত ৯ আগষ্ট ঝিনাইদহ জেলার সদর থানায় কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বত্রিশ পৌরসভা গ্রামের বর্তমানে ঢাকা পল্লবী থানার মিরপুর ডিওএইচএস, বাসা নং ১২৭৪, রোড নং ১০,এভিনিউ-২ এর বাসিন্দা আব্দুর মজিদ ও মোছাঃ রুমেলা খাতুনের ছেলে সংস্থার সভাপতি দাবিদার লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ এর বিরুদ্ধে সাধারণ ডাইরী করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন জানান। যার সাধারণ ডাইরী নং যথাক্রমে ১১৭৩ ও ৫৯০।

এ ব্যাপারে লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ এর মুঠোফোন ০১৭১৮৮১১৪০৪ এ প্রতিবেদক ফোন করে তার বক্তব্যর জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে নির্বাহী পরিচালক দাবিদার ফারুক হোসেনের সাথে তার মুঠো ফোন ০১৭১৩৬০৯০৮২ মুঠো ফোনে যোগাযোগ করে তার কাছে জনবল নিয়োগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন হিডো’র জনবল নিয়োগে গ্লোবাল ফান্ড রেডি হয়নি। তাই এখনও কোথাও তিনি জনবল নিয়োগ দেননি।

এমন কোন প্রমান পত্র কেউ দেখাতে পারবেনা। তিনি আরো দাবি করেন, প্রতারক লায়ন মোঃ তৌফিকুর রহমান ফয়েজ যশোর একটি ব্রাঞ্চের একজন সদস্যসহ যশোর এলাকায় স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন যারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলিতে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে হিডো’র নামে জনবল নিয়োগের কথা বলছেন। ফারুক হোসেন যশোরের সিভিল সার্জনের সাথে নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র হয়েছে এটা স্বীকার করেছেন।