বাফেলোতে তুষারঝড়ে ২৮ জনের মৃত্যু

গত কয়েক দিন উত্তর আমেরিকা জুড়ে বয়ে যাওয়া শীতকালীন তুষারঝড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় বৈরী আবহাওয়া ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিউইয়র্কের বাফেলো শহর। সোমবার শহরটিতে মারা গেছেন অন্তত ২৮ জন। খবর বিবিসির।

নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হচুল বলেছেন, এবারের ঝড় বাফেলোর ইতিহাসে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক হিসেবে লেখা থাকবে। বাফেলোকে এখন একটি যুদ্ধাঞ্চলের মতো দেখাচ্ছে। প্রকৃতির তার সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত হেনেছে।

তিনি বলেন, বাসিন্দারা ‘জীবন হুমকির’ মতো পরিস্থিতিতে পড়েছেন। জরুরি যানবাহন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে পারেনি, তুষারে আটকে গিয়েছিল।

দুই থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের নিয়ে একটি পরিবারকে প্রতিকূল পরিবেশ থেকে উদ্ধারের জন্য দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল।

শিশুদের বাবা জিলা সান্তিয়াগো সিবিএস নিউজকে বলেন, উদ্ধারের আশায় এত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে আমি হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। ইঞ্জিন সচল রেখে ঠান্ডায় জমে যাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম। হতাশা থেকে দূরে থাকতে তিনি শিশুদের সঙ্গে গেম খেলে সময় কাটিয়েছিন বলে জানান।

এখন মূলত বরফ গলার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। বরফে আটকে পড়া যানবাহনগুলো বরফমুক্ত হলে আরও ক্ষতিগ্রস্তদের সন্ধান করা হবে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আবহাওয়া অনুকূলে আসবে। তার আগে জরুরি প্রয়োজন না হলে ভ্রমণ না করতে বলা হয়েছে।

গত এক সপ্তাহে জনজীবনের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলা এ আবহাওয়ায় আনুমানিক আড়াই লাখ বাড়িব ও প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়। পরে অবশ্য বিদ্যুৎ ফিরে এসেছে।

বাফেলোতে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজনকে গাড়ির ভেতর এবং তুষারে ঢাকা রাস্তা থেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। বাফেলো ছাড়াও ভারমন্ট, ওহিও, মিসৌরি, উইসকনসিন, কানসাস এবং কলোরাডোতে ঠান্ডা ও ঝড়ে মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে।

পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা রাজ্যে তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেছে। কানাডায়, অন্টারিও ও কুইবেক প্রদেশেও আঘাত হেনেছে ঝড়। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের মেরিট শহরের কাছে বরফে ঢাকা রাস্তায় একটি বাস উল্টে চারজন নিহত হয়েছে। কানাডা থেকে মেক্সিকান সীমান্ত পর্যন্ত প্রসারিত এই তুষারঝড়ে ও মাত্রাতিরিক্ত ঠান্ডায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৬ জন।