গুলশানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় ভবন থেকে পড়ে তরুণী নিহত

রাজধানীর গুলশানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় ভবন থেকে পড়ে এক তরুণী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও এক নারী।

বুধবার দুপুরে গুলশান-২-এর ৪৭ নম্বর সড়কসংলগ্ন একটি ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই তরুণীর নাম ফারজানা বেগম। তিনি স্বামীর সঙ্গে খিলক্ষেতের বটতলায় থাকতেন। তবে আহত নারীর পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, দুপুরে গুলশান-২ নম্বরের একটি আবাসিক ভবনে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অভিযোগ পেয়ে সেখানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালান। এ সময় ওই ভবন থেকে নিচে পড়েন দুই নারী। তাদের মধ্যে ফারজানা বেগম নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আরেক নারী গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, বিকালে ফারজানাসহ দুই নারীকে হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় চিকিৎসক ফারজানাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অপর নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা গুলশান থানার এসআই আলমগীর হোসেন বলেন, গুলশান-২ নম্বরের ৪৭ নম্বর সড়কে পড়েছিলেন ফারজানা বেগম। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে আনা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ শাহানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, যে ভবন থেকে পড়ে ওই তরুণী মারা গেছেন সেখানে অল দ্য বেস্ট নামে একটি স্পা সেন্টার রয়েছে। স্পা সেন্টারটি ভবনের ফ্ল্যাট ডি-৪-এ অবস্থিত। তবে ঢাকা উত্তর সিটির ম্যাজিস্ট্রেট ওই ভবনের কোন ফ্ল্যাটে অভিযানে গিয়েছিলেন তা আমরা জানি না। এছাড়া নিহত তরুণী স্পা সেন্টারে কাজ করতেন কিনা সেটি জানি না। এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ভালো বলতে পারবেন।

জানা গেছে, ডিএনসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত গুলশানের আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে তারা আজ ৪৭ নম্বর সড়কের ভবনটিতে গিয়েছিলেন।

ফারজানার স্বামী জাহিদ হাসান পেশায় মুদিদোকানি। তিনি যুগান্তরকে বলেন, পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি আমার স্ত্রী মারা গেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় তার স্ত্রী ভবন থেকে লাফ দিয়ে পড়ে মারা গেছে বলে তিনি পুলিশের কাছ থেকে শুনেছেন।

জাহিদ হাসান আরও বলেন, কয়েক দিন আগে ফারজানার বড়বোন আফসানা গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় আসেন। ভাড়া বাসায় সবাই মিলে খিলক্ষেতে থাকতাম। আমার স্ত্রী ও তার বোন চাকরি খুঁজতেছিল। আজ তারা জানায়, গুলশানে একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতে যাচ্ছে। তবে কোন বিউটি পার্লারে কাজ করতে গিয়েছিল সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

নিহতের বড়বোন আফসানার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে শুধু আমাকে ফোন করে বলেছিল তাকে পুলিশ ধরেছে। ফারজানার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে কিছু বলতে পারেনি। শুনেছি এখন সে থানায় আছে। পুলিশও আমাকে থানায় নিয়ে এসেছে।