ঢাকায় বড় শোডাউনের পরিকল্পনা বিএনপির

bnp logo

প্রধান দু’দল এবার মুখোমুখি বিভাগীয় শহরে। আগামীকাল শনিবার ১০ সাংগঠনিক বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করবে বিএনপি। ঢাকার মতো পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সব বিভাগীয় শহরেই মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগও। বিরোধীদের শোডাউনের জবাবে পাল্টা শোডাউন করবে তারা। উত্তপ্ত এ পরিস্থিতিতে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন বিশ্নেষকরা

যুগপৎ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার ১০ বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করবে বিএনপি। কর্মসূচি সফলে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। জেলায় জেলায় দায়িত্বশীল নেতারা উঠান বৈঠক, প্রস্তুতি সভা ও লিফলেট বিতরণ করছেন। চলমান আন্দোলনে বড় পরিসরে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় বড় ধরনের শোডাউনের পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। শনিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে হবে এ সমাবেশ। বিএনপির পাশাপাশি সমমনা দল এবং জোটও ঢাকায় সাধ্যমতো সমাবেশ করবে। সমাবেশ থেকে জনসম্পৃক্ত নানা ইস্যুতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জোট ও দলের সঙ্গে বৈঠক করে কর্মসূচির বিষয়ে মতামত নিয়েছে বিএনপি। এগুলো চূড়ান্ত করে সমাবেশ থেকেই ঘোষণা দেওয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ঢাকা মহানগরে চারটি পদযাত্রায় নেতাকর্মী ছাড়াও খেটে খাওয়া মানুষের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। সরকারের অত্যাচার-নির্যাতন যত বাড়বে, আন্দোলন তত শক্তিশালী হবে। এর মধ্য দিয়েই অর্জিত হবে চূড়ান্ত বিজয়।

জানা গেছে, ঢাকার সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কুমিল্লায় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রাজশাহীতে মির্জা আব্বাস, খুলনায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরিশালে ড. আব্দুল মঈন খান, চট্টগ্রামে নজরুল ইসলাম খান, ময়মনসিংহে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিলেটে বেগম সেলিমা রহমান, ফরিদপুরে ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও রংপুরে মোহাম্মদ শাহজাহান উপস্থিত থাকবেন। জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতাদেরও নিজ নিজ বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নিতে বলা হয়েছে।

বিএনপি নেতারা জানান, ঢাকায় সমাবেশে বিপুল উপস্থিতি নিশ্চিতের জন্য মহানগর ছাড়াও আশপাশের জেলায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। এসব জেলা থেকে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ঢল নামবে নয়াপল্টনে। এ জন্য গতকাল বৃহস্পতিবারও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সভা হয়। বিভাগীয় সমাবেশের লক্ষ্য গত ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে কিছুটা ঝিমিয়ে পড়া বিএনপিকে উজ্জীবিত করা। সমাবেশে উপস্থিতির মাধ্যমে আবারও সাংগঠনিক শক্তির জানান দেওয়া হবে বলে জানান তাঁরা।

সমাবেশ সফলে প্রতিটি সাংগঠনিক বিভাগে ৫ থেকে ৬ লাখ লিফলেট বিতরণের টার্গেট নেওয়া হয়। সমাবেশে যোগদানে উৎসাহিত ও দলের দাবি-দাওয়া বিষয়ে জনগণকে জানাতে ইতোমধ্যে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, হাটবাজার, পাড়া-মহল্লায় পদযাত্রা, প্রচারপত্র বিতরণ, পথসভা, মিছিল ও গণসংযোগ করা হয়েছে। বিগত কয়েক দিন ধরে স্থানীয় ছাড়াও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা গিয়ে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। দলের নির্বাহী সদস্য আবু নাসের রহমাতুল্লাহ এক সপ্তাহ ধরে বরিশালে অবস্থান নিয়ে লিফলেট বিতরণ ও প্রস্তুতি সভা করছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন সমন্বয় করছেন পুরো সমাবেশের প্রস্তুতি পর্ব। ময়মনসিংহে আছেন ভারপ্রাপ্ত দপ্তর ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। প্রতিদিনই বৈঠক, লিফলেট বিতরণ করছেন, জনগণকে আরও সক্রিয় করার চেষ্টায় সময় পার করছেন তিনি।

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ, নিত্যপণ্যে মূল্যবৃদ্ধির মতো গণবিরোধী সিদ্ধান্ত সরকার জনগণের ওপর বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। জনগণের এ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে সারাদেশের বিভাগীয় সমাবেশে।

প্রস্তুত সমমনা দল ও জোট :সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধীনে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে বিএনপিসহ ৫৫টি রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করছে। সাতদলীয় গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, জামায়াত, চার দলের জোট গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, গণফোরামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পিপলস পার্টি, ১৫ সংগঠন সমন্বয়ে পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোটও শনিবার বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে, ১২ দলীয় জোট বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কির সামনে, ১২ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট পল্টনে, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির নতুন জোট আরামবাগে নটর ডেম কলেজের সামনে, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) পূর্ব পান্থপথে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর আড়াইটায়, চার দলের জোট গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ও ১৫ সংগঠন সমন্বয়ে পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট পল্টন মোড়ে সমাবেশ করবে।