অহিংসা ও শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে কলকাতা থেকে নোয়াখালির উদ্দেশ্য পদযাত্রা

মহাত্মা গান্ধীর অহিংসা ও শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে ভারতের কলকাতা থেকে পায়ে হেঁটে যশোরে এসেছেন চার নারী। গত ৯ মার্চ বৃহস্পতিবার বেলেঘাটার গান্ধী ভবন থেকে এই পদযাত্রা শুরু হয়। এদিন রাতে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে যশোরে পৌঁছান। ৯ জেলা পায়ে হেটে আগামী ১৬ মার্চ এই যাত্রা শেষ হবে বাংলাদেশের নোয়াখালির গান্ধী আশ্রমে। আয়োজকরা জানান, ‘শান্তির জন্যই এই পদযাত্রা। এর উদ্দেশ্য, গোটা বিশ্বে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার।

জানা যায়, অস্থির এই বিশ্বে মহাত্মা গান্ধীর পথকেই পাথেয় করে এবং শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে ভারতের চার নারী শুরু করছেন এই পদযাত্রা। ভারতের সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির (এসএনইউ) সহযোগিতায় গান্ধি আশ্রম ট্রাস্ট আয়োজিত ‘গান্ধী অ্যান্ড ওয়াক’ শীর্ষক এই পদযাত্রা শুরু হয় কলকাতার বেলেঘাটার গান্ধী ভবন থেকে। চার সদস্যের একটি দল বৃহস্পতিবার রাতে বেনাপোল হয়ে যশোর শহরে পৌঁছান।

শুক্রবার (১০ মার্চ) সকালে যশোর সার্কিট হাউজে বিশ্রাম নিয়ে দলটি নড়াইলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। লোহাগড়া-ফরিদপুর-ভাঙ্গা-মাওয়া হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবেন। ১৬ তারিখ নোয়াখালির গান্ধী আশ্রমে স্থানীয় সুধী সমাবেশের মাধ্যমে এই যাত্রা শেষ হবে।

পদযাত্রার অংশ নিয়েছেন টিম লিডার ডা. আরজুমন্দ জায়েদি, সদস্য কাশিশ খানম, অনুষ্কা, পার্নোমিতা ডাঙ্গওয়াল। ‘গান্ধী অ্যান্ড ওয়াক’ শিরোনামে একটি ব্যানার ও ভারতীয় জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে এই দলটিকে পায়ে হেটে পদযাত্রা করতে দেখা যাচ্ছে। মানুষের সঙ্গে কথা বলে পৌঁছে দিচ্ছেন শান্তির বার্তা। ভারতের এই দলের সঙ্গে নোয়াখালির গান্ধী আশ্রমের দুইজন সহযোগী প্রতিনিধিও রয়েছেন।

পায়ে হেটে পদযাত্রায় শুক্রবার দুপুরে যশোর ছাড়ার আগে যশোর সার্কিট হাউজে দলের টিম লিডার ডা. আরজুমন্দ জায়েদি জানান, মহাত্মা গান্ধীর চিন্তাভাবনা আমাদের গোটা বিশ্বকেই উজ্জীবিত করে। তার শান্তির বাণী আজ সারা বিশ্বেই আদৃত। আমাদের এই পদযাত্রা শান্তির জন্যই এই উদ্যোগ। এর উদ্দেশ্য, গোটা বিশ্বে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। আগামীদিনে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এই শান্তি যাত্রার পরিকল্পনা আছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

নোয়াখালির গান্ধী আশ্রমের শান্তিকর্মী খায়রুজ্জামান খোকন বলেন, ব্রিটিশ শাসনামলের শেষের দিকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানের মতো নোয়াখালীতেও হিন্দু-মুসলিম সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। সেই দুঃসময়ে শান্তি মিশন নিয়ে নোয়াখালি ছুটে আসেন মহাত্মা গান্ধী। ১৯৪৬ সালের ৭ নভেম্বর থেকে ১৯৪৭ সালের ২ মার্চ পর্যন্ত নোয়াখালী অবস্থানকালে তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্ব স্থাপনসহ সেবামূলক বিভিন্ন কাজে হাত দেন। মহাত্মা গান্ধী আমৃত্যু মানুষের মধ্যে শান্তি ও অহিংসার বাণী প্রচার করে গেছেন। মহাত্মা গান্ধীর অহিংসা ও শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে এই আয়োজন। এই যাত্রা আগামী ১৬ তারিখ নোয়াখালী গান্ধী আশ্রম ও ট্রাস্টে শেষ হবে। এর মাঝে এই দল ৯টা জেলা পায়ে হেটে শান্তির পদযাত্রা শান্তির বার্তা পৌঁছে দেবেন মানুষের কাছে।