টাইগারদের যত ‘বাংলাওয়াশ’

টানা দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ দল। টাইগারদের সামনে এবার ইংলিশদের ‘বাংলাওয়াশ’ করার সুযোগ। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি খেলতে নামবে সাকিবের দল। ম্যাচ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায়। এই ম্যাচে সাকিব আল হাসানের দল জিতলেই হোয়াইটওয়াশ হবেন জস বাটলাররা।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বয়স হয়ে গেছে দুই দশক। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতেও দুই দশক অপেক্ষা করতে হয়েছে টাইগারদের। এই সিরিজ জয় তাই বাংলাদেশের জন্য বিশেষ কিছু। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে তৈরি হবে নতুন ইতিহাস। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম তখন ভেসে যাবে আনন্দবানে।

ক্রিকেট বিশ্বে হোয়াইটওয়াশ শব্দটাই একটু বেশি প্রচলিত। একটি দল যখন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সিরিজের সব গুলো ম্যাচই জিতে নেয় তখনি সেটি হয়ে ওঠে হোয়াইটওয়াশ। বাংলায় যাকে বলে ধবল ধোলাই। আর, বাংলার টাইগাররা যখন বাঘের হুংকার ছেড়ে প্রতিপক্ষকে এভাবেই হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দেয় তখন সেটির বাংলা সংস্করণ ‘বাংলাওয়াশ’।

২০১০ সালের অক্টোবরে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। বৃষ্টিতে এক ম্যাচ ভেসে যাওয়ায় তা পরিণত হয়েছিল চার ম্যাচের সিরিজে। চার ম্যাচের চারটিতেই জিতেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের উইনিং মোমেন্টে সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে ধারাভাষ্যকার আতাহার আলী খান এর নাম দিলেন—’বাংলাওয়াশ’! সেই থেকেই ‘বাংলাওয়াশ’ কথাটির প্রচলন। এর আগে-পরেও প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করেছে বাংলাদেশ।

প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দেওয়া বাংলাদেশ শুরু করে ২০০৬ সালে কেনিয়াকে দিয়ে। তিন সংস্করণ মিলিয়ে একাধিক ম্যাচের দ্বিপক্ষীয় সিরিজে প্রতিপক্ষকে এখন পর্যন্ত মোট ২২ বার ‘বাংলাওয়াশ’ করেছে বাংলাদেশ। যেহেতু বাকি দুই ফরম্যাট থেকে ওয়ানডেতেই শক্তিশালী বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবে এই সংস্করণে সর্বোচ্চ ১৬ বার প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাইয়ের তিক্ত স্বাদ দিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞতা হয়েছে ৩ বার করে। ২২ ধবলধোলাইয়ের মধ্যে ১৫টি দেশে, ৭টি প্রতিপক্ষের মাঠে।

 

৫০ ওভারের ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি ৬ বার জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩ বার, নিউজিল্যান্ড ও কেনিয়াকে ২ বার করে এবং আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানকে একবার করে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দিয়েছে লাল সবুজের দল।

 

টেস্টে এখন পর্যন্ত তিন বার প্রতিপক্ষকে ‘বাংলাওয়াশ’ করেছে টাইগাররা। ২০০৯ সালে উইন্ডিজের মাটিতে ২-০ ব্যবধানে হারানোর পর ৯ বছর পর দেশেও একই ব্যবধানে জিতেছেন সাকিব-তামিমরা। এছাড়া জিম্বাবুয়েকে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হারিয়েছে বাংলাদেশ।

 

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয় ২০১২ সালে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই সিরিজেই তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দিয়েছে মুশফিকুর রহিমের দল। ২০২০ সালে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়েকে ও গত বছর দুবাইয়ে আরব আমিরাতকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে টাইগাররা।

 

টাইগারদের যত ‘বাংলাওয়াশ’-

 

টেস্ট সিরিজ

 

২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২-০ ব্যবধানে

 

২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ে ৩-০ ব্যবধানে

 

২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০ ব্যবধানে

 

ওয়ানডে সিরিজ

 

২০০৬ সালে কেনিয়া ৪-০ ব্যবধানে

 

২০০৬ সালে কেনিয়া ৩-০ ব্যবধানে

 

২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ে ৪-০ ব্যবধানে

 

২০০৬ সালে স্কটল্যান্ড ২-০ ব্যবধানে

 

২০০৮ সালে আয়ারল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে

 

২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩-০ ব্যবধানে

 

২০১০ সালে নিউজিল্যান্ড ৪-০ ব্যবধানে

২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে

২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ে ৫-০ ব্যবধানে

২০১৫ সালে পাকিস্তান ৩-০ ব্যবধানে

২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ে ৩-০ ব্যবধানে

২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ে ৩-০ ব্যবধানে

২০২০ সালে জিম্বাবুয়ে ৩-০ ব্যবধানে

২০২১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩-০ ব্যবধানে

২০২১ সালে জিম্বাবুয়ে ৩-০ ব্যবধানে

২০২২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩-০ ব্যবধানে

 

টি-টোয়েন্টি সিরিজ

২০১২ সালে আয়ারল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে

২০২০ সালে জিম্বাবুয়ে ২-০ ব্যবধানে

২০২২ সালে আমিরাত ২-০ ব্যবধানে।