লড়াইয়ে প্রতিদিন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি: ফখরুল

mirza fokrul
ফাইল ছবি

বিএনপির আন্দোলনে অংশ নিয়ে নিহত হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনেকে স্বামী হারিয়েছে, বাবা হারিয়েছে, ছেলে হারিয়েছে, ভাই হারিয়েছে। তাদের রক্তের স্রোত, মায়ের অশ্রুধারা কখনও বৃথা যেতে পারে না। লড়াই শুরু করেছি অধিকার ফিরে পাবার জন্য। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, একটা আধুনিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা লড়াই করছি। মানুষের অধিকার পাওয়ার জন্য, ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই শুরু করেছি। এই লড়াই আমরা অনেক দূরে গিয়েছি। প্রতিদিন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সমস্ত মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অতি শিগগিরই এই লড়াইয়ে জয়ী হব।

শুক্রবার দুপুরে ডিআরইউতে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিএনপির আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সভার আয়োজন করে অর্পণ বাংলাদেশ। এতে তিনি বলেন, এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে আমার আসতে ইচ্ছে করে না। গত ১৫ বছর ধরে এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে আমরা আসি। কষ্ট পাই, পরিবারগুলো কষ্ট পায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা তাদের জন্য খুব বেশি কিছু করতে পারিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের চলমান আন্দোলন তো করার কথা না। আমরা আন্দোলন করেছি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। যারা আমাদের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছিল, গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছিল। একটা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করছিল না। যে কারণে একটা যুদ্ধ হয়েছে। সেই যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করেছি। একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। আমাদের দুর্ভাগ্য- সেই গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য আবারও লড়াই করতে হচ্ছে, প্রাণ দিতে হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশ যে এই পরিস্থিতিতে পড়বে, তা আমরা কখনও ভাবিনি, কেউ ভাবেনি। মাঝে মাঝে মনে হয় এ কেমন দেশ আমরা তৈরি করলাম? যে দেশে মানুষের সম্মান থাকবে না, যে দেশের মানুষের প্রাণের কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না, বেঁচে থাকবার কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না, আমি আমার ভোট দিতে পারবো না, সেখানে আমি আমার কথা বলতে পারব না, আমার প্রতি অন্যায় হবে সে কথা বলতে পারবো না, আইনজীবীরা কোর্টে পুলিশের হাতে পিটুনি খাবেন। সেই দেশটা আমরা চিন্তা করিনি, কোনোদিন ভাবিওনি।

সুপ্রিমকোর্টে সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিচারপতির কাছে গিয়েছিলেন আমাদের আইনজীবীরা। তিনি বলেছেন, আমার যদি কিছু করার থাকে তাহলে আমি করবো। তিনি যদি এ কথা বলেন তাহলে কোথায় যাব আমরা? কার কাছে যাব আমরা? এ দেশের মানুষ কোথায় যাবে?

অর্পণ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বিথীকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিতি ছিলেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

এ সময় গুম হওয়া পরিবারের সদস্যরা তাদের বক্তব্যে পরিজনকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।