১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ঝিনাইদহের ৬৮ তরুণ-তরুণী

ঝিনাইদহের যুবকদের ভিটেবাড়ি বিক্রির নজীরও রয়েছে পুলিশে চাকরি নিতে। কথিত আছে এক সময় ছিল টাকা ছাড়া পুলিশে চাকরি মিলতো না। তদ্বীর আর টাকার কাছে চাকরি ছিল অধরা। কিন্তু চাকরীর ক্ষেত্রে সেই বৃত্ত ভেঙ্গে সচ্ছ ও জবাবদিহীতা ফিরিছে পুলিশে। ঝিনাইদহের সাবেক পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামানের মতো বর্তমান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশিকুর রহমান (বিপিএম, পিপিএম, বার)জেলার বেকার যুবক ও তরুণ-তরুণীদের জন্য মাত্র ১২০ টাকায় আবেদন করে পুলিশে চাকরি দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন।

বিনা টাকায় চাকরী পেয়েছেন জমজ দুই ভাইসহ ৬৮ তরুণ-তরুণী। রোববার রাত ১১টার দিকে ট্রেইনিং রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশিকুর রহমান।শৈলকূপা উপজেলার ধলহরাচন্দ্র গ্রামের আপন জমজ দুই ভাই হাসান ও হুসাইন এক সঙ্গে চাকরী পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। চাকরীর পর পুলিশের মোবাইল দিয়েই মায়ের কাছে ফোন করেন। দুই ছেলের এক সঙ্গে চাকরী হওয়ার খবর পেয়ে আবেগ আর ধরে রাখতে পারেননি।অপরদিকে মহেশপুর উপজেলার আঁখিতারা খাতুন তিনি বলেন, স্বপ্ন ছিল পুলিশে চাকরী করার। কিন্তু স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবতার বিস্তর ব্যবধানে আশাহত হয়েছিলাম। হঠাৎ একদিন জানতে পারি পুলিশে চাকরী পেতে কোন টাকা লাগে না। পরে ১২০ টাকায় আবেদন ফরম পূরণ করে লাইনে দাঁড়াই। বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়ে বিনা টাকায় চাকরী পেয়েছি।

আঁখিতারার পিতা আখের আলী বলেন, আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন আজ। বিনা পয়সায় মেয়ে চাকরী পেয়েছে। টাকা ছাড়া মেয়ের চাকরী হবে ভাবতে পারিনী। চাকরী পাওয়ায় প্রমাণ পেলাম পুলিশের চাকরীতে ঘুস লাগে না। পিতৃহারা শাহরিয়ার জোবায়ের লেখাপড়া ও নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিলেন শঙ্কার মধ্যে। পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরী হয়েছে তার। নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আবেগ আপ্লুত শাহরিয়ার জোবায়ের কথা বলতে পারছিলেন না। সদর উপজেলার পোড়া বাকড়ি এলাকার এ তরুণ বলেন, আমার বাবা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন।

আমার মা অনেক কষ্ট করে আমাকে লেখা পড়া করাচ্ছেন। আমি বাংলাদেশ পুলিশের গর্বিত একজন সদস্য হতে পেরেছি। দেশের জন্য নিজের জীবন বাজি রাখবো। এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশিকুর রহমান জানান, জেলায় পুলিশের ৬৮ জন কনস্টেবল নিয়োগের জন্য ২, ৩ ও ৪ মার্চ ২ হাজার ৩’শ ৪৮ জন প্রাথমিক পরীক্ষায় অংশ নেন। এতে যাচাই-বাছাইয়ের পর শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করেন ৪’শ ১৮ জন চাকরী প্রার্থী। গেল ৯ মার্চ যাদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১’শ ৬৪ জন। আর ১৯ মার্চ রোববার চূড়ান্ত পরীক্ষায় পাশ করেন ৬৮ জন।