যশোরে ১৪ মামলায় ১৫ জনকে প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছে আদালত। পরে তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রবেশন কর্মকর্তার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। সোমবার ব্যতিক্রমী এ রায় প্রদান করেন যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম। এ রায় প্রদানের পর আদালত প্রাঙ্গণে আলোড়ন সৃষ্টি হয় । রায়ের পর হাতে হাত কড়ার পরিবর্তে ফুল দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন। পরবর্তিতে বিষয়টি জানতে পেরে আইনজীবী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ বিষয়টির সাধুবাদ জানিয়েছেন। আর এ কাজ করতে অনুপ্রেরণা যোগাতে তাদের প্রত্যেকটি একটি করে ফুলের তোড়া হাতে তুলে দেয়া হয়েছে বলে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এসময় প্রবেশন অফিসার আব্দুল ওহাব উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, প্রবেশনকালীন সময় বাড়িতে থেকে নিজ এলাকার মসজিদে ইবাদত বন্দিগি করবেন মুক্তিপ্রাপ্তরা। এছাড়া মসজিদ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন তারা। এরবাইরো নিজ এলাকায় গাছ লাগাবেন ও তা পরিচর্যা করবেন । এবং গ্রামের রাস্তায় কেউ যাতে ধানসহ বিভিন্ন ফসলাদি না রাখে সে বিষয়ে এলাকাবাসীকে সচেতন করে তুলবেন । এ ধরণের নয়টি শর্তদিয়ে সোমবার ওই ১৫ আসামিকে প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছে আদালত। তার মধ্যে রয়েছেন একজন নারী। ওই নারীকে রমজান মাসে এলাকায় শিশুদের কোরআন শিক্ষা দিতে হবে আদালত সূত্রটি নিশ্চিত করেন।
প্রবেশনে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, কেশবপুর আলতাপোল গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে হাসান, অভয়নগর উপজেলার নাউলী গ্রামের মৃত আতিয়ার শেখের ছেলে জান্নাত শেখ, যশোর সদর উপজেলার তপসী ডাঙ্গা গ্রামের সদর উদ্দিনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম, বেনাপোল পোর্ট থানার ঘিবা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে আক্কাস আলী, ঝিকরগাছা উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মৃত কাশেম আলীর ছেলে মওলা বক্স, মণিরামপুর উপজেলার চালকি ডাঙ্গা গ্রামের নওশের আলীর ছেলে কামরুল ইসলাম, যশোর সদর উপজেলার চানপাড়ার মফিজুল ইসলামের ঝেলে রিপন, অভয়নগর উপজেলার হিদিয়া গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে খালেদুল ইসলাম ও একই গ্রামের মৃত ফজলু গ্রামের ছেলে শফিকুল গাজী, যশোর সদর উপজেলার ভগলপুর গ্রামের ওলিয়ার রহমানের ছেলে শিমুল হোসেন ও একই গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে সজিব হোসেন, নীলগঞ্জ সুপারিবাগান এলাকার মফিজুর রহমানের ছেলে মিরাজুল শেখ, মণিরামপুর উপজেলার বড় চিতলা গ্রামের মৃত ওয়াজেদ মোড়লের ছেলে রোজউল মোড়ল, বেনাপোল কাগজপুকুর গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে শাহাজাহান, যশোর সদর উপজেলার হাসিমপুর গ্রামের আমজাদ মোল্লার স্ত্রী শাহিদা বেগম।
আদালত সূত্র জানায়, আসামিরা বিভিন্ন সময় সামান্য পরিমান মাদক নিয়ে আটক হয়েছে।
আটকের পর তারা নিয়মিত আদালতে হাজিরা দেন। একদিনও হাজিরা কামায় দেননি। এছাড়া তাদেরকে শর্তদেয়া হয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে কোন প্রকার অপরাধের সাথে জড়িত হতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, অভয়নগর উপজেলার হিদিয়া গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে খালেদুল ইসলাম ও একই গ্রামের মৃত ফজলু গ্রামের ছেলে শফিকুল গাজীকে তিন মাসের জন্য ও বাকি সকল আসামিকে চয়মাসের জন্য প্রবেশনে মুক্তি দেয়া হয়েছে।