যশোর শহরের বেজপাড়া তালতলার মোড় এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী হাসানুজ্জামান হানিফ (২৪) ও আশরাফুল আলম রাব্বি ওরফে মাছ রাবিব (২৫)সহ ৬জনকে ককটেল ও ফেনসিডিলসহ আটক করেছে কোতয়ালি থানা পুলিশ। এই ঘটনায় দুইটি মামলা হয়েছে।
গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে বেজপাড়া কবরস্থান রোডস্থ গিয়াস উদ্দিন মহুরির পুকুর পাড় থেকে তাদের আটক করা হয় বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও এলাকার লোকজনের ভাষ্যমতে গত বৃহস্পতিবার তাদের আটক করা হয়।
হানিফ চোপদারপাড়ার মৃত ইসতিয়াক আলী মোড়লের ছেলে। আর মাছ রাব্বি বেজপাড়া তালতালার মোড় এলাকার ইমান আলীর ছেলে।
বাকিরা হলো, কবরস্থান রোডের মান্নানের ছেলে বিপুল (২০), বেজপাড়া তালতালার মোড়ের আবু বক্কার সিদ্দিকীর ছেলে তানভীর ওরফে তালু (২৪), মৃত তারা মিয়ার ছেলে তুষার (২২) এবং বেজপাড়া পানির ট্যাংক এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে হাসান (২৩)।
কোতয়ালি থানার এসআই শরীফ আল মামুন জানিয়েছেন, গত শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে জানতে পারেন কবরস্থান রোডস্থ মহুরীর পুকুর পাড়ে কতিপয় যুবক অবস্থান করছে। রাত ৩টার দিকে সেখানে গেলে আসামিরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পিছু ধাওয়া করে তাদের আটক করা হয়। এরপর তাদের কাছ থেকে অবিস্ফোরিত ককটেল এবং ৪৪ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় বিস্ফোরক আইন ও মাদক আইনে আলাদা দুইটি মামলা হয়েছে।
এসআই আলম মামুন জানিয়েছেন, আটক আসামিদের মাধ্যে হানিফ, হাসান ও মাছ রাব্বি চিহ্নিত সন্ত্রাসী। হানিফের বিরুদ্ধে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মারামারি, বিস্ফোরক আইনসহ বিভিন্ন আইনে ৭টি মামলা আছে। মাছ রাব্বির বিরুদ্ধে আছে ৬টি মামলা। আর হাসানের বিরুদ্ধে আছে ২টি মামলা। এদের মধ্যে হানিফ শনিবার ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সালমান আহমেদ শুভ জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।
এদিকে এলাকার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বেজপাড়া তালতালার মোড় ও বেজপাড়া কবরস্থান রোড এখন বিভিন্ন অপরাধীর আস্তানার স্থল। দিন রাত সারাক্ষণ কবরস্থান রোডে বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি হয়ে থাকে। বিভিন্ন এলাকার অচেনা মানুষজন ওই রোডের মহুরির পুকুরপাড়ে আড্ডা দিয়ে থাকে। নিরিবিলি এলাকায় এবং অন্ধকারাচ্ছন্ন হওয়ায় অপরাধীদের নিরাপদ স্থান এখন মহুরীর পুুকুর পাড়।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, আগে পুলিশি টহল নিয়মিত ছিলো বেজপাড়া কবরস্থান রোডে। এখন পুলিশি টহল নিয়মিত না থাকায় অপরাধীরা নিরাপদে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়। এছাড়া ওই রোডে একটি পুলিশিং ফোরামের কার্যক্রম সক্রিয় ছিলো। বছর দুইয়েক হলো সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অপরাধীরা সেখানে অবাধে ঘোরাফেরা করতে পারে। সন্ধ্যা হলেই সেখানে সেবন হয় ইয়াবা ফেনসিডিলসহ নানা ধরনের মাদক। বেচাকেনা হয়ে থাকে মাদক ও অস্ত্র। এলাকাবাসি ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারে না। প্রায় সময় ছিনতাই সংঘটিত হয়ে থাকে। ওই মহল্লাটি এখন অপরাধীর আবাসস্থলে পরিনত হয়েছে। ওই রোডের সাধারণ মানুষ এক প্রকার জিম্মিদশার মধ্যে রয়েছে। পুলিশ কার্যকরি উদ্যোগ না নিলে এলাকার লোকজন অপরাধীদের জিম্মিদশা থেকে রেহাই পবে না বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।