পবিপ্রবিতে ছাত্রী র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির তদন্ত কাজ শুরু

pabna map

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় সোমবার
থেকে তদন্ত শুরু করেছেন ৫ সদস্যের অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটি। শিগগিরই তদন্ত
প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে বলে জানানো হয়। এর আগে র‌্যাগিংয়ের শিকার ওই ছাত্রীকে
ডেকে কমিটি তার কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেন। পাবিপ্রবির ছাত্র উপজেলার
মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বিষয়টি জানান।

উল্লেখ্য, র‌্যাগিংয়ের শিকার শিমু রানী তালুকদার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের
প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পাবিপ্রবির ছাত্রী শিমু রানী তালুকদার শনিবার রাতে
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি ছাত্রাবাসে র‌্যাগিংয়ের শিকার হন। পরে তাকে পাবনা
জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অভিযুক্তরা হলেন-পরিসংখ্যান বিভাগের রুকাইয়া,
সাদিয়া পারভীন সোমা, তসলিমা, গুলনাহার, সুমাইয়া, সাকিলা; জনপ্রশাসন
বিভাগের সৈয়দা সুলতানা শাওন এবং ইংরেজি বিভাগের ইসরাত জাহান ইমু।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পাঁচ তলা সবজে
টাওয়ারে পাবিপ্রবির অনেক ছাত্রী ভাড়ায় বসবাস করেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে
সিনিয়র শিক্ষার্থীরা প্রথম বর্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ছাদের উপর ডেকে
নেয়। এ সময় শিমু রানী তালুকদার তার অসুস্থতার কথা জানালেও সিনিয়ররা তা
কর্ণপাত করেননি। বরং সিনিয়ররা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ছাত্রাবাসের ছাদে রাত ১১টা
পর্যন্ত র‌্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন চালায়। এসময় শিমু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে
পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শিমু রানী তালুকদার র‌্যাগিংয়ের বর্ণনা দিতে চাননি। তবে
তিনি বলেন, ‘আমি চাই না আমার পরিবার বা অন্য কেউ এই ঘটনা জানুক। আমি
সিনিয়রদের একাধিকবার সতর্ক করার পরও তারা আমার কথা শোনেনি। কেউ যেন আমার
মতো শিকার না হয়।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর কয়েকজন বন্ধু জানান, রাত ৮টার দিকে মেসের কয়েকজন সিনিয়র
(আপু) তাকে মেসের ছাদে ডেকে নেয়। এরপর তাকে শিষ্টাচার শেখানোর নামে
সিনিয়ররা তাকে মানসিকভাবে হয়রানি করে। এভাবে রাত ১১টা পর্যন্ত শিষ্টাচার
শেখানোর পর মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর বড়রা অ্যাম্বুলেন্স ডেকে পাবনা জেনারেল
হাসপাতালে ভর্তি করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, হোস্টেলের মালিক আবুল
কালাম আজাদ ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন। আজাদ দাবি করেন, রাতে ১০
জুনিয়র ছাত্রকে মেসের কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র উপরের তলায় ডেকেছিল।
এ ব্যাপারে ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুল্লাহ বলেন, বিষয়টি জানার পর
অসুস্থ ছাত্রের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। আমি প্রক্টরকে রিপোর্ট করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কমল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় যারা দোষী সাব্যস্ত হবে; তাদের
অবশ্যই উপযুক্ত শাস্তি পেতেই হবে এবং সে বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছে। প্রক্টর কামাল
হোসেনও এই তদন্ত কমিটির একজন সদস্য।