যশোরের ঝিকরগাছার বাঁকড়ায় মাটিভর্তি ৬টি জব্দকৃত ট্রাক মামলা না করে আটকের একদিন পর ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার দিবাগত গভীররাতে ঝিকরগাছা-বাঁকড়া আবুল ইসলাম সড়কের নারাঙ্গালী মোড় সড়ক থেকে ৬টি ট্রাক থানা পুলিশ আটক করে। এরমধ্যে ৪টি ট্রাকে মাটি ভর্তি এবং দুটি খালি ছিল। ঝিকরগাছা থানায় জায়গা সংকটের কারণে ট্রাকগুলো উপজেলা পরিষদ চত্বরে রাখা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন ঝিকরগাছা উপজেলা শাখার ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির প্রস্তাবিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবীর। তিনি ঝিকরগাছা থানা পুলিশকে ‘অনৈতিক সুবিধা’ দিয়ে মামলা থেকে বিরত থাকার ব্যবস্থা গ্রহণে সমর্থ্য হন।
এদিকে, যথাসময়ে মামলা না হওয়া,সময়ক্ষেপণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সমস্যা এবং সংশ্লিষ্টদের ক্ষমাপ্রার্থনার কারণে মুচলেকা নিয়ে মঙ্গলবার রাতে ছেড়ে দিয়েছেন ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
যশোর জেলা শাখার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব মো.আসলাম উদ্দিন রবিন ও সদস্য মাহমুদ হাসান জানান,উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ তারা সোমবার গভীর রাতে একটি ত্রাণ কার্যক্রম শেষে ঝিকরগাছায় ফিরছিলেন। ওইসময় (রাত সাড়ে ১২টা) ঝিকরগাছা-বাঁকড়া আবুল ইসলাম সড়কের নারাঙ্গালী মোড়ে মাটিবোঝাই একটি ট্রাক দেখতে পান। সেখানে থামার পর আরও ৫টি ট্রাক দেখতে পেয়ে সেগুলোকেও থামানো হয়। এর মধ্যে চারটি ট্রাকে মাটি বোঝাই ছিল। অবৈধভাবে মাটি পরিবহনের কারণে ইউএনও ম্যাডাম গাড়িগুলো আটক ও আটককৃত গাড়ির বিরুদ্ধে পুলিশকে আইনগত ব্যবস্থা নেবার কথা জানানো হয়। পুলিশ সেদিকে কোনও কর্ণপাত করেনি । বরং আটককৃত গাড়ির ড্রাইভার-হেলপারদের সাথে পুলিশকে উপজেলা মোড়ে চা নাস্তা করতে দেখা গেছে। যার প্রমাণ ভিডিও ফুটেজে আছে।
তারা আরো জানান,গাড়িগুলির মালিক ঝিকরগাছা হাজিরালী এলাকার গোল্ড ব্রিকসের (মহসীন ভাটার)।
পুলিশের সাথে অর্থনৈতিক লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি (প্রস্তাবিত) সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর এই প্রতিনিধিকে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের কোনো জবাব না দিয়ে যশোরের বিভিন্ন সাংবাদিকদের সঙ্গে তার পরিচয় আছে বলে দম্ভোক্তি করেন।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা থানার ওসি বাবলুর রহমান খান বলেন, সোমবার রাত দেড়টার দিকে ৬টি ট্রাক পুলিশের টহল টিমের কাছে দেন ইউএনও। পরে ট্রাকগুলো উপজেলা পরিষদে রাখা হয়। পরে কী হয়েছে তা আমার জানা নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো লেনদেনের অভিযোগ ঠিক না।
জানতে চাইলে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভূপালী সরকার বলেন, মামলার বাদী না পাওয়ায় এবং সংশ্লিষ্টদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।