পুলিশে চাকরি দেয়ার নামে ৩০ লাখ টাকা চাদাবাজির ঘটনায় যশোর সদর পুলিশ ফাড়ির টিএসআই রফিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। বুধবার যশোর সদরের পাচবাড়িয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম মন্ডল বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন কোতয়ালি থানার ওসিকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী মোস্তফা মাহফুজুর রহমান।
অপর আসামিরা হলো,খুলনা খানজাহান আলী থানার মশিয়ালি গ্রামের মৃত ইউসুফ আলী শিকদারের দুই ছেলে শফিকুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম এবং যশোর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক আশকার হোসেন।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, যশোর শহরের চাল বাজারের পাশের একটি কাপড়ের দোকানে শহিদুল ইসলাম মন্ডলের সাথে টিএসআই রফিকের পরিচয় হয়। সেদিন শহিদুল ইসলাম তার দুই ছেলেকে পুলিশের চাকরিতে দিতে ইচ্ছা পোষন করেন রফিকের সামনে। রফিক সেদিন তার কাছ থেকে তার ঠিকানা সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। ৫/৬ দিন পর টিএসআই রফিক তার দুই সহকর্মী পুলিশ সাথে নিয়ে শহিদুল ইসলামের পাচবাড়িয়া গ্রামের বাড়ি যান এবং তার দুই ছেলেকে দেখে চাকরির নিশ্চয়তা দেন। এরপর টিএসআই রফিক তার জমিজায়গার খেঁাজ নেন। একপর্যায়ে তার একদাগে ২ একর ১০ শতক জমির দেখে টিএসআই রফিক হঁাস-মুরগী ও গরুর খামারের প্রস্তাব দেন এবং জমির কাগজ পত্র নিয়ে যান।
২০২৫ সালের ৩ ডিসেম্বর যশোর পুলিশ লাইনে কনস্টেবল পদে লোক নিয়োগ পরীক্ষা হয়। এদিন শহিদুল ইসলামের দুই ছেলে পুলিশ লাইন মাঠে গেলে টিএসআইর রফিক তাদের মাঠে দঁাড় করিয়ে চলে যান। প্রাথমিক বাছায়ে শহিদুল ইসলামের দুই ছেলে বাদ পড়ে যায়। বিষয়টি যশোর ফঁাড়িতে গিয়ে টিএসআই রফিককে জানান শহিদুল ইসলাম। তারপরও রফিক তাদের চাকরি দিবেন বলে আশস্ত করেন। ৬ ডিসেম্বর তার দুই ছেলেকে ডেকে টিএসআই রফিক লিখিত পরীক্ষা নেন এবং চাকরি না হওয়ায় বাড়ি চলে যান।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে শহিদুল ইসলামকে সদর ফঁাড়িতে ডেকে টিএসআই রফিক গালিগালাজ করেন এবং তার দু্ই ছেলেকে চাকরি দেয়ার জন্য কর্মকর্তাদের দেয়া ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় তার ২ একর ১০ শতক জমি দলিল করে দলিল করে দেয়ার প্রস্তাব দিলে রাজি না হওয়ায় হত্যার হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। ওই বছরের ১২ মার্চ টিএসআই রফিকসহ দুই পুলিশ সদস্য শহিদুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তাকে ও তার স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে অপহরণ করে যশোর সদর ফঁাড়িতে এনে আটকে রাখে।
রাত ১০ টার পরে টিএসআই রফিক দলিল লেখক আশকার হোসেনকে ফঁাড়িতে এনে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ক্রেতা শফিকুল ইসলামের নামের দলিলে স্বাক্ষর করে নেন। পরদিন তাদের সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রি করে নেন। এনিয়ে বাড়াবাড়ি করলে পরিবারের সকলকে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ২০২০ সালে শফিকুল ইসলাম তার এ জমি তার ভাই রফিকুল ইসলামের নামে দলিল করে দেন। এরপর থেকে তারা টিএসআই রফিক গরুর খামার করে জমি ভোগদখল করে আসাছিলেন। আসামি টিএসআই রফিক প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনার সময় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবহস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে পরিবেশ অনুকুলে আশায় তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।