বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে অনেকটা সুস্থ হয়ে দেশে ফিরেছেন। দীর্ঘদিনের অসুস্থতায় হুইলচেয়ার নিয়ে চলাচল করা খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৬ মে) গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে ভেতরে প্রবেশ করেন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তাদের বহনকারী কাতারের রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর তারা গাড়িযোগে গুলশানের বাসভবনের উদ্দেশে রওনা হন। দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে তাদের গাড়িটি ফিরোজায় প্রবেশ করে।
লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ বিভিন্ন অসুস্থতার কারণে হুইলচেয়ারে চলাচল করা খালেদা জিয়া তখন সবাইকে অবাক করে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে বাড়িতে ঢোকেন। সে সময় তাকে ধরে রেখেছিলেন দুই পুত্রবধূ। এসময় সেখানে ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। উপস্থিত বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তখন স্লোগান দিচ্ছিলেন। খালেদা জিয়াকে হাঁটতে দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারা।
তারা বলছিলেন, গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন। তার নেতৃত্বে আমরা সব বাধা অতিক্রম করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত হলে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার পথ উন্মুক্ত হয়। গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান তিনি। সেখানে পৌঁছানোর পর তাকে লন্ডন ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালটিতে তিনি ১৭ দিন প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি এবং অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন।
লন্ডনে চিকিৎসা শেষে বাংলাদেশ সময় সোমবার (৫ মে) রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে খালেদা জিয়া কাতারের রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান পুত্র তারেক রহমান।
উড়োজাহাজটি মাঝে কাতারের রাজধানী দোহায় যাত্রাবিরতি করে। এরপর বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা ৫ মিনিটে বিশেষ ওই উড়োজাহাজ দোহা বিমানবন্দর থেকে ঢাকার পথে যাত্রা করে।