ঈদের শেষ মুহুর্তে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ঝিনাইদহের দর্জি শ্রমিকেরা

dorjiবসির আহাম্মেদ, ঝিনাইদহ: ঈদের শেষ মুহুর্তে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাপড় তৈরির কারিগর তথা দর্জি শ্রমিকরা। জানা গেছে ঈদের শেষ মুহুর্তে দর্জি শ্রমিক ও ট্রেইলার্স-এর মালিকরা সার্বক্ষণিক অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। প্রতিদিন ভোর হবার পর হতে গভীর রাত পর্যন্ত তারা পোশাক তৈরি করার জন্য খাওয়ার সময়টুকু পর্যন্ত পাচ্ছেনা। তাঁরা এ সময়কে পরিশ্রম একটু বেশি হলেও কাজ করতে তাঁদের থাকছে না কোন অনিহা। কারণ পরিশ্রমের পাশা পাশি শ্রমিকরা মজুরিও বেশি পাচ্ছে। যাঁর কারণে মনে প্রাণে দর্জি শ্রমিক ও টেইলাসের মালিকরা রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।

এমনকি দর্জি শ্রমিক ও টেইলার্সের মালিকরা তাঁদের পরিবারের সাথে এই রমজান মাসেও ইফতার করার সময় পর্যন্ত পাচ্ছেনা তাঁরা। ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকায় দর্জি শ্রমিকদের নির্ঘুম রাত জেগে পোষাক তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় প্রায় ৩৫০০ থেকে ৪০০০টির মত টেইলার্সের দোকান আছে।

ঝিনাইদহ শহরে উল্লেখ যোগ্য কয়েকটি টেইলার্সের কর্মব্যস্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে তার মধ্যে হল রহিম টেইলার্স, শতরূপা টেইলার্স, আলী টেইলার্স, বেঙ্গল টেইলার্স, সাইমুন টেইলাস, হাফিজ ড্রেস ম্যাট, নকশি টেইলাস, ও বিষয়খালী বাজারের শুভ টেইলার্স, শেখ টেইলার্স, মুসলিম টেইলার্স ও বৈশাখী টেইলার্স।

ঝিনাইদহ শহরের রহিম টেইলার্সের স্বত্তাধিকারী মোঃ আব্দুর রহিম জানান- রোজা শুরু হওয়ার পর হতে প্রতি বছরের মত এ বছরেও অগ্রিম পোশাক তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ক্রেতারা। ফলে রাত-দিন আমাদেরকে কাজ করতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান- গার্মেন্টস্রে তৈরি রেডিমেট পোশাক অনেক সময় শরীরের সাথে ফিটিং না হওয়ায় টেইলার্সের তৈরি পোশাকের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। ঈদকে সামনে রেখে এ বছর প্যান্ট ৪০০ টাকা, শার্ট ৩৫০টাকা, স্যালোয়ার কামিজ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঞ্জাবী ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, ব্লাউজ ২০০ টাকা, বোরখা ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকাই তৈরি করছে।

তিনি আরো জানান বাজিরাও মাস্তানী, বাগি ড্রেস, সামপুরা, লং কোটি, মাসাককালী, ওয়াইফাই ড্রেস এর চাহিদা থাকায় প্রথম রমজান থেকে প্রতিদিনই ড্রেসের অর্ডার নেওয়া হয়েছে কিন্তু ২২ রমজানের পর থেকে অর্ডার নেওয়া বন্ধ। ড্রেসের মুজরি রাখা হচ্ছে ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা।

এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয়, ঝিনাইদহ শহরের বিক্রমপুর ক্লথ স্টোরের কাটিং মাস্টার আতিয়ার রহমানের সাথে। তিনি জানালেন- প্রতিবছরের ন্যয় এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তাদের অগ্রিম বেচাকেনা ও কর্মব্যস্ততা বেড়ে গেছে। এ অবস্থা থাকলে বেচাকেনা আরও ভাল হবে বলে তারা আশাপ্রকাশ করেন। তাই ঈদের শেষ মুহুর্তে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে আমাদের। শতকর্মব্যস্ততার মাঝেও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নতুন পোশাক তৈরী করতে পেরে আমরাও আনান্দিত।