ডেস্ক রিপোর্ট: খুলনা-৪ (রূপসা-তেরখাদা ও দিঘলিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক হুইপ এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা আর নেই। বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। সুজার ভাই এসএম মোর্তজা রশিদী দারা জানান, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২টার দিকে সুজার মৃত্যু হয়েছে। সিঙ্গাপুরে তার স্ত্রী সঙ্গে রয়েছেন। দ্রুত মরদেহ আনার প্রস্তুতি চলছে।
মৃত্যুকালে সুজার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মরহুমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আট মাস আগে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে সুজার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। সে সময়ে দেশে ফেরার পর খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে তাকে গণসংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল।
সম্প্রতি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৮ জুলাই সুজাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। কিন্তু, চিকিৎসকরা তাকে আর বাঁচাতে পারলেন না।
সুজা তিনবার খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
খুলনা আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন সুজা। এছাড়া খুলনা নাট্য নিকেতনসহ বিভিন্ন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন আজীবন।
তিনি ১৯৫৩ সালের ২ মার্চ বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। ন্যাপ ভাসানীর ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের মাধ্যমে ১৯৬৮-৬৯ সালে রাজনীতি শুরু করেন।
১৯৭২ সালে খুলনা আবাহনী ক্লাবের মাধ্যমে যুবলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন সুজা। ১৯৭৯ সালে খুলনা পৌরসভার লিয়াকত নগর ইউনিয়ন (যা বর্তমানে কেসিসির ২৮, ৩০ ও ৩১ নং ওয়ার্ড) কমিশনার নির্বাচিত হন।
১৯৮৬ সালে খুলনা-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে পরাজিত হন সুজা। পরে ১৯৯১ সালে খুলনা-৪ আসন থেকে বিজয়ী হন তিনি।
এরপর ১৯৯৬ এর নির্বাচনেও একই আসন থেকে বিজয়ী হওয়ার পর হুইপ মনোনীত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজিত হলেও সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি ফের এমপি নির্বাচিত হন।
সুজার মৃত্যুতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সংসদ সদস্য মন্নুজান সুফিয়ান, সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান, খুলনার মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ প্রমুখ।
তারা মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।