একজন শহিদুল ইসলাম, যিনি নিরবে শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। হাজার হাজার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বন্ধু শহিদুল এবার মাঠে নেমেছে সবুজ বিপ্লবের লক্ষে। যশোরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনি রোপন করবেন ফলজ, বনজ আর ঔষধী বৃক্ষ। আর তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার যশোরের জামিয়া মাদানিয়া যশোর মাদ্রাসা এবং কৃষ্ণবাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অর্ধশতাধীক বৃক্ষ রোপন করে তার অভিযানের শুভ উদ্বোধন করেন।
এ সময় তার সাথে আরো উপস্থিত ছিলেন- সিটি ক্যবল প্রাইভেট লি: এর এমডি মীর মোশারফ হোসেন বাবু, কৃষ্ণবাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার লাকী, সাংবাদিক ডি এইচ দিলসান, ডা: ফিরোজ, ডা: সাইদুর রহমান, রুহল আমিন, নাজমুল হোসেনসহ আরো অনেকে।
এই অভিযানের পুরো অর্থ তিনি রিক্সা চালিয়েয় যোগাড় করছেন। তিনি ভ্যান চালিয়ে ২০০৮ সাল থেকে দরিদ্র, এতিম ও প্রতিবন্ধী প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে নিয়মিত শিক্ষা উপকরন বিতরন করে আসছেন। মাথার ঘাম পায়ে ফেলা খেটে খাওয়া এই আলোকিত শহিদুল ইসলাম যশোর জেলার পুলেরহাট এলাকার কৃষ্ণবাটী গ্রামের মৃত আমির হোসেনের ছেলে।
তিনি বলেন, আমার যখন ২ বছর বয়স তখন আমার বাবা মারা যায়, এর পর ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করি। তখন মাত্র ৪০ টাকার অভাবে আমি বিত্তি পরীক্ষা দিতে পারিনি। সে দিন থেকেই প্রতিঞ্জা করি অর্থের অভাবে কারো লেখোপড়া বন্ধ হতে দিবো না।
তিনি বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি আমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ফলজ, বনজ এবং ঔষধী গাছ লাগানো শুরু করেছি।
তিনি বলেন, স্কুলের ছেলে মেয়েরা আমার লাগানো গাছের ফল খাবে, তাতে তাদের পুষ্টির চাহিদা পুরোণ হবে।
তিনি বলেন, আমি ২০০৪ সালে বিয়ে করি, এর পর ২০০৮ সাল থেকে আমি প্রতিটা স্কুলে স্কুলে ঘুরে দরিদ্র পরিবারের ছেলে মেয়েদেরকে বই, খাতা, পেন্সিল, পোষাক, পরীক্ষার ফি ও নগদ টাকা দিয়ে আসছি। এমন অনেক সময় আছে আমি নিজে না খেয়ে ছেলে মেয়েদেরকে বই খাতা কিনে দিয়েছি। এখন থেকে এর পাশাপাশি আমি বৃক্ষ রোপন করে যশোরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সবুজে ভরিয়ে দিবো।
তিনি বলেন, তার একটাই ইচ্ছা যত দিন বেঁচে আছি তত দিন এই কাজই করে যাব। আর এ কাজের জন্য তার সব থেকে বড় অনুপ্রেরনা তার মা আর স্ত্রীর।
তিনি বলেন, আমি কোন সময় ভ্যান চালায় আবার কোন সময় রিক্সা চালিয়ে উপার্জন করি। এর সাথে প্লাস্টিক সামগ্রী বিক্রী করে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা আয় করি। এর মধ্যে ২ হাজার টাকা আমি বই খাতা কেনার জন্য আলাদা করে রেখে দিই। প্রতিমাসে এক হাজার টাকা করে জমিয়ে দরীদ্র বাচ্চাদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমার আর একটা ইচ্ছা সেটা হলো একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষন কেন্দ্র করা। যেখানে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ শিক্ষার্থীদের বিনামুল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষন দিবো, যাতে করে দরীদ্র শিক্ষার্থীরা বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে।