৩৩ জনকে খুন : ভালোবাসা বঞ্চিত এক সিরিয়াল কিলারের গল্প!

৩৩ জন ট্রাক চালক ও হেলপারকে হত্যার দায়ে গ্রেফতার ভারতীয় সিরিয়াল কিলার আদেশ খামরা বলেছেন, ‘আমি কখনই বাবার ভালোবাসা পাইনি, যে কারণে আমি এই পথে এসেছি। বুধবার পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আবেগপ্রবণ হয়ে এ তথ্য জানান ভয়ঙ্কর এই খুনি।

এর আগে মঙ্গলবার ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ‘দিনে দর্জি, রাতে ভয়ঙ্কর খুনি’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে উঠে আসে কীভাবে আদেশ খামরা অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় মধ্যপ্রদেশ, মহরাষ্ট্র থেকে বিহার, ঝারখণ্ড-সহ বিভিন্ন প্রদেশে ট্রাকচালক ও হেলপারদের হত্যা করেন। ট্রাকচালকদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলে ফাঁদে ফেলতো এই খুনি।

দিনের বেলা দর্জির দোকানে কাপড় সেলাইয়ের কাজ করে সে; ছোট্ট এক দোকানে সারাদিন সেলাই মেশিনে বসেই কেটে যায় দিন। কিন্তু তার এই রূপের পরিবর্তন ঘটে রাতে। দর্জি থেকে রাতে ভয়ঙ্কর খুনির রূপ ধারণ করে মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা আদেশ খামরার।

রাতে বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করে আর পরিকল্পনা করতে থাকে নৃশংস সব অপরাধের। সেলাই মেশিনের সুই থেকে হাতে উঠে তার কুঠার, রশি কখনো নেশাজাতীয় দ্রব্য অথবা মদ। শুরু হয় হত্যাযজ্ঞ। ঘটনার শুরু ২০১০ সালে। প্রথম হত্যাকাণ্ড অমরাবতি জেলায়, দ্বিতীয়টি নাশিকে। তখন থেকে অন্তত ৩৩ জনকে হত্যা করেছে আদেশ।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে খামরা বলেন, ‘কেউই আমার খোঁজ-খবর রাখতো না। আমি অন্তর্মূখী হয়েছিলাম। আমার মনের ভেতরে এত রাগ জমে ছিল যে, বুঝতে পারি নাই; আমি একজন সহিংস মানুষ হয়ে উঠছি।’ জিজ্ঞাসাবাদে সে বলছে, যারা তার টার্গেটে পরিণত হয়েছিল; তাদের সঙ্গে পরবর্তীতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলে হত্যা করতো সে।

পুলিশের কাছে দেয়া তথ্যে খামরা বলছে, তার বাবা গুলাব খারমা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত নায়েব সুবেদার ছিলেন। প্যারেড গ্রাউন্ডের কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলা নিজের পরিবারের সদস্যদের মানতে বাধ্য করতেন তিনি। মধ্যপ্রদেশের ভোপাল জেলার পুলিশ সুপার লোধা রাহুল কুমার বলেন, খামরা বলছে, ছোটবেলা থেকেই তার বাবা তার সঙ্গে কঠোর শাসন করতেন। তিনি আদেশকে মারপিট করতেন। এমনকি ছোটখাট বিষয় নিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতেন।