মানুষের মলে প্লাস্টিক!

বিভিন্ন গবেষণায় পশুর পরিপাকযন্ত্রে ক্ষুদ্র প্লাস্টিক পাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমনকি এগুলোর রক্ত, লসিকা ও যকৃতেও প্লাস্টিকের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। তবে এবার নতুন তথ্য দিলেন গবেষকরা। তারা বলছেন, মানুষের মলে প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। তা-ও আবার এক প্রকারের নয়, গুনে গুনে নয় প্রকার প্লাস্টিক শনাক্ত করেছেন গবেষকরা। খবর ডয়চে ভেলের।

গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রিয়ার একদল গবেষক। দেশটির মেডিকেল ইউনিভার্সিটি অব ভিয়েনা ও ফেডারেল এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি যৌথভাবে গবেষণাটি করে। এই পাইলট গবেষণায় অস্ট্রিয়া, ব্রিটেন, ফিনল্যান্ড, ইটাতি, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, রাশিয়া ও জাপানের আটজনের এক সপ্তাহের খাবারের রুটিন পর্যবেক্ষণ করা হয়। ওই আটজনকে বলা হয়, নির্দিষ্ট সপ্তাহে তারা কী কী খেয়েছেন বা পান করেছেন, তা একটা ডায়েরিতে লিখে রাখতে। পরবর্তীতে তাদের মলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

এতে দেখা যায়, আটজনের সবাই প্লাস্টিকের প্যাকেটের ভেতর থাকা খাবার খেয়েছেন কিংবা প্লাস্টিক বোতল থেকে পানি খেয়েছেন। তাদের কেউই নিরামিষভোজী ছিলেন না। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো তাদের প্রত্যেকের মলের নমুনায় প্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

‘আমাদের গবেষণাগারে করা এই পরীক্ষায় তাদের মলে আমরা নয় ধরনের প্লাস্টিক পেয়েছি। এগুলোর আকার ৫০ থেকে ৫০০ মাইক্রোমিটার’- বলেন রাষ্ট্রীয় পরিবেশ সংস্থার গবেষক বেটিনা লিবমান।

গবেষকদের ধারণা, প্লাস্টিকের রাসায়নিকের কারণে পরিপাকযন্ত্র নষ্ট হয়ে যেতে পারে, কিংবা প্লাস্টিক উপাদানের উপস্থিতির কারণে তা ফুলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে মানুষের শরীরে আসলেই কী ধরনের প্রভাব পড়ার আশঙ্কা আছে- তা প্রকৃতভাবে নির্ণয়ের জন্য আরও গবেষণা দরকার।

ঠিক কোন ধরনের খাবার কোন ধরনের প্লাস্টিকের উপস্থিতির কারণ- তা অবশ্য বলতে পারেনি গবেষক দলটি। তবে তারা বলছেন, খাবার ছাড়াও মানব শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উৎস হতে পারে গাড়ির টায়ার, নির্মাণ সামগ্রী এবং কসমেটিকের উপাদান।

অবশ্য ঝুঁকি নিরূপণের জন্য জার্মানির যে ফেডারেল ইন্সটিটিউট কাজ করে, তারা বলছে, প্লাস্টিক মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর কিনা কিংবা কতটা ক্ষতিকর- তা নির্ধারণ করা এখনও সম্ভব হয়নি।