চিলির জাতীয় দলে বাংলাদেশের শোয়েব

শোয়েব গাজী। বাংলাদেশের লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা প্রয়াত মাহাবুব রাব্বানি রামগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন। শৈশবের দিনগুলোতে শোয়েবের ক্রিকেটের প্রতি আকর্ষণ ছিল। পড়ালেখার পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) প্রশিক্ষণও নিয়েছেন।

বর্তমানে তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে দেশ চিলির জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে খেলছেন। তার বোলিং প্রতিভায় চিলি জাতীয় ক্রিকেট লিগও মাতিয়েছেন। তিনি দ্রুতগতির বোলার। জানা গেছে, দাখিল পাশের পর থেকে শোয়েব রামগঞ্জ থেকে ঢাকায় পড়তে যান।

সেখানে যাত্রাবাড়ির তামিরুল মিল্লাত থেকে আলিম পাশ করে ধানমন্ডির স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেন তিনি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্প্যানিশ ভাষায় ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ২০১৫ সালে তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য চিলি পাড়ি জমান।

এদিকে ঢাকায় পড়ালেখার পাশাপাশি ২০০২ সালে বিকেএসপির অধীনে লক্ষীপুর অনুর্ধ-১৬ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল ঘেঁষে দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের দেশ চিলি। দেশটিতে ৫০-৬০ জন বাংলাদেশির বসবাস।

তম্মধ্যে শোয়েব গাজী একজন। রাজধানী সান্টিয়াগোর ইউনিভার্সিটি অব চিলি থেকে স্প্যানিশ ভাষায় উচ্চতর ডিগ্রী নেবার পর ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটিতে এমবিএ ভর্তি হন শোয়েব গাজী। চিলির প্রবাসী জীবনের শুরুতে তিনি এ যাত্রায় সুযোগ পেয়ে যান ক্রিকেট প্রতিভাকে তুলে ধরার।

ফেব্রুয়ারি থেকে মে অবধি চলে চিলিতে ক্রিকেট মৌসুম। ২০১৬ সালে স্থানীয় স্টেশন সেন্টার ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে লীগে তার প্রথম ম্যাচের প্রথম ওভারেই মাত্র ১ রানে ২ ব্যাটসম্যানকে বোল্ডআউট করে নজর কাড়েন চিলির জাতীয় নির্বাচকদের।

একই বছর জাতীয় ক্রিকেট দলে ডাক পান তিনি। পরে সাউথ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ ক্রিকেটে ব্রাজিলের বিপক্ষে চিলির হয়ে অভিষেক ঘটে তার। এ লীগে মেক্সিকো, পেরু ও কলম্বিয়াকেও হারায় চিলি। আর্জেন্টিনার সঙ্গে গ্রুপ ম্যাচে হেরে যায় তারা।

তবে ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারিয়েই শিরোপা জিতে চিলি। এরমধ্য দিয়ে ল্যাটিন আমেরিকার ইতিহাসে লেখা হয় শোয়েব গাজীর নাম, সেই সঙ্গে লাল-সবুজের বাংলাদেশেরও। ক্রিকেটার হিসেবে দক্ষিণ আমেরিকার মাঠ মাতালেও নিজের পেশা নিয়ে দারুণ ভাবনা শোয়েবের।

চিলির রাজধানী সান্টিয়াগো থেকে ১৮শ’ কিলোমিটার দূরে পেরু-বলিভিয়া সীমান্তে বাণিজ্যিক নগরী ইকিকের একটি অটোমোবাইল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানে ‘একাউন্টিং এন্ড এডমিনিস্ট্রেটিভ’ শাখায় কর্মরত রয়েছেন তিনি। কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হতে গিয়ে ২০১৭ ও ২০১৮ মৌসুমে চিলি জাতীয় ক্রিকেট দলের মূল একাদশ থেকে নিজেকে বিরত রাখেন শোয়েব গাজী।

তবেঅনুশীলন অব্যাহত রেখেছেন। তার আগুন ঝরানো বোলিং ধরে রাখার সুবাধে ২০১৯ মৌসুমের চিলি মূল একাদশের হয়ে মাঠে নামার কথা রয়েছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নয়নেরও অবদান রাখতে চান শোয়েব।