নিপার পাশে দাঁড়ালেন শিক্ষা বন্ধু শহিদুল ও সামাজিক সংগঠন স্বার্থহীন

যশোরের শার্শায় জিপের চাপায় পা হারানো মেধাবী স্কুল ছাত্রী নিপার পাশে দাড়িয়েছেন স্বার্থহীন সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষা বন্ধু শহিদুল ইসলাম। শিক্ষা বন্ধু শহিদুল ইসলাম পুরো সপ্তাহ রিক্সা চালিয়ে তার উপার্জনের টাকা তুলে দেন নিপার চিকিৎস্যার। সোমবার সন্ধায় তিনি যশোর সদর হাসপাতালে গিয়ে নিপার পিতার হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন।

আর গত রবিবার বিকালে স্বার্থহীন সামাজিক সংগঠনের সভাপতি হাসেম মাহমুদ নাইস ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে নিপার বাবার হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন। যদিও প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করার কথা থাকলেও উল্লেখযোগ্য সাহায্য হচ্ছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার চিকিৎসা খরচসহ সকল সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও ভুক্তভোগী পরিবারটিকে উল্লেখযোগ্য ভাবে কোন আর্থিক সহযোগিতা করা হচ্ছে না বলে জানান নিপার মা।

তিনি জানান, তার মেয়ে নাভারণ পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর একজন মেধাবি ছাত্রী। গত কয়েকদিন আগে পঞ্চম শ্রেণীতে মেধাবৃত্তির ফলাফলে ট্যালেন্টপুলি বৃত্তি পেয়েছে। মেয়েকে নিয়ে তিনি চারদিকে ধুয়াশা দেখছেন। অনেক আশা ছিল মেয়েকে ডাক্তার বানাবেন। এখন সেই স্বপ্ন পূরণ করাতো কঠিন ব্যাপার মেয়েটি সুস্থ হয়ে উঠেতে পারবেন কিনা এ চিন্তায় তার ঘুম-খাওয়া নেই। তার বাবা একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। পরিবারের তেমন সম্পদও নেই। তার পক্ষে উন্নত চিকিৎসার টাকা জোগাড় করা কঠিন। ঘটনার দিন জেলা প্রশাসক নিজে ও নাভারনে শিক্ষার্থীদের এক মানববন্ধনে শার্শা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল চিকিৎসাসহ ও আর্থিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। কিন্তু ঘটনার সাতদিন পার হলেও তারা সেই অর্থে আর্থিক সহযোগিতা পাননি। জেলা প্রশাসন থেকে মাত্র দশ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১ লাখ টাকা। কৃত্রিম পা লাগিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন।

নিপার বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, মেয়েটি যেন সমাজের বোঝা না হয়। সেই জন্য প্রশাসনের কাছে উন্নত ও চালককে উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার দাবি করেন। তিনি মাস্টার্স পাশ। প্রধানমন্ত্রী তার একটি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে তার সকল দুঃচিন্তর অবসান হতো।

এ ব্যাপারে শিক্ষা বন্ধু শহিদুল ইসলাম জানান, আমি যখন খবর পেয়েছি তার পর দিন থেকে রিক্সা চালিয়ে আমার উপার্জনের সব টাকা জমিয়ে আমি নিপার চিকিৎস্যার জন্য দিয়েছি। আমি চাই সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এসে নিপাকে আবার রসুস্থ সবল আর ১০টা মেয়ের মত সুন্দর কৈশর ফিরিয়ে দিক।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (২০ মার্চ) জিপ গাড়ির চাপায় নাভারণ পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী মিমতাহুল জান্নাত নিপার শরীর থেকে পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় তার সাথে থাকা স্মৃতি ও রিপা নামে আরো দুই স্কুল ছাত্রী আহত হয়।