‘সিআইএ’র সৃষ্টি আইএস’

মধ্যপ্রাচ্যে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস পরাজিত হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের বর্বরোচিত হামলা অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রতি শ্রীলংকায় তিনটি গির্জা ও তিনটি বিলাবহুল হোটেলে প্রাণঘাতী হামলায় ২৫৩ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।

উইলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, আইএস গঠনের পথ তৈরি করার জন্য মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ দায়ী। ২০১৬ সালে পাঁচ লাখেরও বেশি মার্কিন গোপনীয় কূটনৈতিক নথি প্রকাশের সময় তিনি এ তথ্য দিয়েছেন। তখন ব্রিটেনের দ্য ডেইলি এক্সপ্রেস পত্রিকায় এ খবরটি ছেপেছে।

২০১০ সালের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো স্পর্শকাতর মার্কিন গোপন নথি প্রকাশ করে উইকিলিকস। পরবর্তীতে ছয় বছর পরে আরেক দফা নথি ফাঁস করে প্রতিষ্ঠানটি, যাতে ১৯৭৯ সাল থেকে মার্কিন গোপনীয় কূটনৈতিক নথি ছিল।

তখন নথি প্রকাশের পাশাপাশি এক বিবৃতিতে অ্যাসাঞ্জ ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে ১৯৭৯ সাল থেকে শুরু হওয়া একটা ঘটনা প্রবাহের ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে আইএস তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, যদি আধুনিক সময়ের কোনো একটি বছরকে ‘শূন্য বছর’ বলে আখ্যায়িত করতে হয়, তবে সেটি হচ্ছে ১৯৭৯ সাল।

অ্যাসাঞ্জ বলেন, শোভিয়েত ইউনিয়নের মোকাবেলায় সৌদি আরবকে সঙ্গে নিয়ে সিআইএ আফগান মুজাহিদিন যোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহে শত শত কোটি ডলার ঢেলেছিল। যার পরবর্তী ফল ছিল সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদা গঠন হওয়া।

‌‘যার রেশ ধরে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলা, আফগানিস্তান ও ইরাকে মার্কিন আগ্রাসন এবং আইএস গঠন।’

১৯৭৯ সালটি কীভাবে চলমান বৈশ্বিক ঘটনাবলীর জন্ম দিয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ইসলামি বিপ্লব, সৌদি ইসলামিক বিদ্রোহ, মিসর-ইসরাইল ক্যাম্প ডেভিড চুক্তিতে কেবল বর্তমান আঞ্চলিক ক্ষমতাশক্তিই তৈরি করেনি, বরং তেল, উগ্র ইসলাম এবং বিশ্বের নেতৃত্বকেও বদলে দিয়েছে।

‌‌‘মক্কায় বিদ্রোহ সৌদি আরবকে স্থায়ীভাবে ওহাবি আন্দোলনের দিকে নিয়ে গেছে। যেটা ইসলামি মৌলবাদের আন্তঃদেশীয় প্রচারে দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং আফগানিস্তানে মার্কিন-সৌদি অস্থিতিশীলতা তো রয়েছেই।’

তিনি বলেন, ঠিক এই জায়গায় এসে ওসামা বিন লাদেন তার দেশ সৌদি আরব ছেড়ে পাকিস্তানে পাড়ি জমান আফগান মুজাহিদিনকে সহায়তা করতে।

‘ইউএসএসআরের আফগান আগ্রাসনের সময়ে অপারেশন সাইক্লোনের নামে মুজাহিদিন যোদ্ধাদের কোটি কোটি ডলার ঢেলেছে সৌদি আরব ও সিআইএ। এতে আল-কায়েদার উত্থানের ইন্ধন যোগান হয়েছে আবার সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়েছে।’