প্রাণ বাঁচাতে বাড়ির বিছানায় আশ্রয় নিল বনের বাঘ

কথায় বলে বাঘে-মহিষে এক ঘাটে পানি খাওয়া। বাঘে-মানুষে এক ঘরে বাস করার গল্প তেমন শোনা যায় না। তবে গল্পে শোনা না গেলেও বাস্তবে তাই ঘটেছে। আসামে প্রবল বন্যায় দুর্গত এক বাঘ প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছে লোকালয়ে। শুকনো জায়গা খুঁজতে গিয়ে ঢুকে গেছে এক ব্যক্তির ঘরে। তারপর আরাম করে বসেছে বিছানায়।

ভয়াবহ বন্যার মধ্যে লোকালয়ে চলে আসা আসামের কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কের এক বাঘের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার টুইটারে ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট ইন্ডিয়ার পোস্ট করা ওই ছবিতে ক্লান্ত এক রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে একটি ঘরের বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। খবর এনডিটিভির।

আসামের এবারের বন্যায় কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কের অসংখ্য বন্যপ্রাণী মারা গেছে কিংবা বাস্তুচূ্যত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা ধারণা করছেন।

ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট ইন্ডিয়া বলেছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ন্যাশনাল পার্কের ২০০ মিটার দূরে মহাসড়কের পাশে বাঘটিকে দেখা যায়। প্রাণীটি এরপর কারবি হিলসের পথে মহাসড়ক ধরে আরও প্রায় ৫০০ মিটার এগিয়ে যায়। এরপর সম্ভবত খানিকটা বিরক্ত হয়েই কাছের একটি বাতিল জিনিসপত্রের গ্যারেজের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং একটি অন্ধকার ঘরে আশ্রয় নেয়।

বাঘটিকে দেখে প্রতিবেশীরা চিৎকার দিয়ে সতর্ক করলে বাড়ির মালিক তার গৃহে ‘অনাহূত অতিথির উপস্থিতি’ টের পান। আসামের এবারের ভয়াবহ বন্যা রাজ্যটির লাখ লাখ বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছাড়া করেছে। বন্যার কারণে রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া ভারতের বিহার, অরুণাচল, পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর, নেপাল ও মিয়ানমারে বন্যায় দুই শতাধিক মানুষ মারা গেছে।

বন কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যায় কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কটির ৯৫ শতাংশই ডুবে গেছে। এ পার্কেই বিপন্ন প্রজাতির এক শিংওয়ালা গণ্ডারের বসবাস।

বন্যার কারণে চলতি সপ্তাহেই পার্কটির ৩০টি বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। ভেসে যাওয়ার কবল থেকে বাঁচতে পার্কটির অনেক প্রাণীকেই বন ছেড়ে পালাতে দেখা যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বন কর্মকর্তারা।