হুমায়ূন আহমেদের ‘নির্বাসন’-এর অপেক্ষায় রিয়াজ

‘হুমায়ূন আহমেদ স্যারকে আমার কাছে পরিপূর্ণ একজন মানুষ মনে হয়। স্যারকে দেখে কখনো আমার শিশু মনে হয়েছে, আবার কখনো মনে হয়েছে প্রেমিক পুরুষ। আবার কখনও বা আধ্যাত্মিক একজন মানুষও মনে হয়েছে। স্যারের সঙ্গে কথা বলার সময় আমি অনেক রূপ দেখেছি। দেখতে দেখতে স্যার চলে যাওয়ার সাতটি বছর হয়ে গেল। সত্যি মনে হচ্ছে, ওই তো সেদিন স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, কাজ করেছি। সবাই স্যারের জন্য দোয়া করবেন।’ আজ হুমায়ূন আহমেদের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করে এসব কথা বলেন নায়ক রিয়াজ।

আজ ১৯ জুলাই নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী। হুমায়ূন আহমেদের অনেক নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ। হুমায়ূন আহমেদের ‘দুই দুয়ারী’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে রিয়াজ পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

হুমায়ূন আহমেদের গল্পের কাজ নিয়ে রিয়াজ বলেন, “স্যার চলে যাওয়ার পর কিছু কাজ করেছি উনার গল্পে, সেখানে এক ধরনের শূন্যতা অনুভব করেছি। শুটিং ইউনিটে প্রাণ খুঁজে পাইনি আমি। সব সময় স্যারের ছায়া অনুভব করেছি। স্যারের গল্পে কাজ করার একটা ক্ষুধা এখনো অনুভব করি। ‘নির্বাসন’ গল্প থেকে ছবির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন স্যার। আমার ভীষণ পছন্দের গল্প ‘নির্বাসন’। ছবিটি এখনো বানানো হয়নি। ছবিটির ব্যাপারে মেহের আফরোজ শাওনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। অপেক্ষায় আছি। ‘দুই দুয়ারী’-তে রহস্যমানব চরিত্রে অভিনয় করে আমি ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলাম। আজকে আমি রিয়াজ হওয়ার পেছনে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের অনেক ভূমিকা রয়েছে বলে আমি মনে করি।”

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার ও গীতিকার। আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের পথিকৃৎ বলা হয় তাঁকে।

হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত উল্লেখ্যযোগ্য চলচ্চিত্র হলো দুই দুয়ারী, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেটুপুত্র কমলা ইত্যাদি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। লেখালেখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বার্থে তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে দেন।

২০১১ সালে তাঁর শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। দেশ ও দেশের বাইরে অনেক চিকিৎসার পরও সুস্থ হয়ে ওঠেননি তিনি। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই মারা যান কিংবদন্তি এই লেখক। নুহাশপল্লীর লিচুতলায় তাঁকে সমাহিত করা হয়।